ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদ জালিয়াতির ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খান। ডিবি পুলিশ তাকে দুই দিনের সময় দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। এর মধ্যে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেয়ার সুযোগ পাবেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদ জালিয়াতির ঘটনায় ডিবি কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় আলী আকবর খানকে। এরপর ডিবি কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
হারুন অর রশীদ বলেন, কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রীকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনিও স্বীকার করেছেন যে জাল সনদ তৈরির কারখানা তৈরি করেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আমরা ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। এর মধ্যে ৫ জন দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। শামসুজ্জামানের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন সেটাও স্বীকার করেছেন। শামসুজ্জামান ও কারিগরির চেয়ারম্যানের স্ত্রী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আমরা কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য ওএসডি হওয়া চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছ থেকে জানতে চেয়েছি, কারিগরির ওয়েবসাইটের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে কীভাবে মাসের পর মাস এ ধরনের জালিয়াতি হয়েছে? তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। প্রতিষ্ঠান চলে তার নির্দেশনা ও নেতৃত্বে। সেই প্রতিষ্ঠান থেকে কাগজ নিয়ে যাচ্ছে, সিসিটিভিতেও দেখা যাচ্ছে। তারপর কেন ব্যবস্থা নেয়া হলো না। আবার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকও সার্টিফিকেটগুলোতে স্বাক্ষর করে গেছেন মাসের পর মাস।
হারুন বলেন, এসব কাজ চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অবহেলায় করেছেন নাকি স্বপ্রণোদিত হয়ে করেছেন, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এমন জালিয়াতি জেনেও ব্যবস্থা নেয়া হলো না কেন? সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের লোকবল কম ছিল। তাই নজরদারি করা সম্ভব হয়নি।’
সার্টিফিকেট কেনাবেচা হচ্ছে, সার্টিফিকেট বানানোর পর আবার ওয়েবসাইটেও আপলোড হচ্ছে; এতসব অনিয়মের পরও তিনি (কারিগরির চেয়ারম্যান) দায় এড়াতে পারেন কি না। স্ত্রীর বিষয়টিও তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। জানতেন না বলে দাবি করেছেন।
হারুন বলেন, সনদ জালিয়াতির ঘটনায় তার দায় সম্পর্কে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে। প্রয়োজনে তাকে এক দুদিনের সময় দেব। তিনি যদি সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পারেন আর আমরা যদি তার সংশ্লিষ্টতা বা অনৈতিক যোগসাজশের তথ্য-প্রমাণ পাই তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও চেয়ারম্যান জানার পরও ব্যবস্থা না নেয়ার বিষয়ে ডিবি প্রধান বলেন, আমরা আরেকটু তদন্ত করব। এটা ইচ্ছাকৃত নাকি জেনেও ব্যবস্থা নেননি তা জানার চেষ্টা করব। দায় এড়ানোর তো সুযোগই নেই। তিনি ইতোমধ্যে ওএসডি হয়েছেন।