spot_img

আল্লাহ যাদেরকে বেশি বিপদে ফেলেন

অবশ্যই পরুন

মন খারাপ বা বেশি ভালো। দুটোতেই ক্ষতির সম্ভাবনা প্রবল। দুটোই সময় নষ্ট করে। দুটোর দুটো খারাপ দিক রয়েছে। ‘মন খারাপ’ হতাশায় ভোগায়। ‘মন বেশি ভালো’ দুনিয়ার লোভ জাগায়।

আমি মুমিন। আমি মুসলমান। আমি ভুগতে চাই না হতাশায়। আমি পড়তে চাই না দুনিয়ার মিছে মায়ায়। তারপরও আমি মানুষ। আমার একটা জীবন আছে। সেই জীবনের সঙ্গে প্রতিনিয়তই করতে হয় যুদ্ধ। একটা মনও আছে আমার। সেই মনের সঙ্গে আমার প্রায়ই হয় মনোমালিন্য। জীবনে সুখ-দুঃখ আসবেই। আসবে ভালো-খারাপের বৈচিত্র্য। সব মোকাবেলা করেই অগ্রসর হতে হবে সামনে। সঠিক পথে থাকতে হবে অটল। তবেই মিলবে অফুরন্ত চিরস্থায়ী সুখের ঠিকানা।

সুখের সাথে দুঃখ মিলেই হয় জীবন। দুঃখ জীবনের এক অপরিহার্য অনুষঙ্গ। এমন একটিও জীবন পাবে না, যাতে দুঃখের সাহচর্য নেই।

আমরা মানুষ, অস্থির জাতি। সামান্য কষ্ট হলেই, একটু বিপদে পড়লেই হয়ে যাই অস্থির। ধৈর্যহারা। আশ্রয় নেই মিথ্যার। প্রশ্রয় দেই অন্যায়কে। ভুগি হতাশায়। আল্লাহর প্রতি তুলি অভিযোগ। ‘আল্লাহ কেন এই বিপদ দিলেন আমাকে? কেন দিলেন এই কষ্ট? কেনই-বা দিলেন এতো অভাব?’ আরও অনেক কিছু বলে থাকি!

আমরা ভুলে যাই, দুনিয়াটা কেবল একটি পরীক্ষাকেন্দ্র। এখানে নির্ণয় হয়- আমাদের মধ্যে আল্লাহর অনুগত কে? আর কে আল্লাহবিমুখ?

জীবনের ধাপে ধাপে আসবে পরীক্ষা। চতুর্মুখী পরীক্ষা। পরীক্ষা আরামের হয় না কখনো। ভালো রেজাল্টের জন্য করতে হয় প্রচুর পরিশ্রম, অবিরাম মেহনত। বিসর্জন দিতে হয় আরাম-আয়েশ। তবেই পদচুম্বন করে সফলতা।

আল্লাহতায়ালা মাঝেমধ্যে তাঁর বান্দাদের পরীক্ষা করেন। আরোপ করেন বিভিন্ন বিপদাপদ। যারা বিপদে ধৈর্যধারণ করে, মহান আল্লাহ তাদেরকে দেন উত্তম প্রতিদান।

আল্লাহপাক ইরশাদ করেন, ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জানমাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর আপনি সুসংবাদ দিন ধৈর্যশীলদের।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫)

আয়াতে আল্লাহতায়ালা বান্দার পরীক্ষার ধরন বর্ণনা করেছেন। বলে দিয়েছেন, উত্তীর্ণ হওয়ার পদ্ধতিও। সফলতা ধৈর্যের মাঝে। বিপদ যত বড়ই হোক না কেন; মুক্তি মিলবে ধৈর্যধারণেই।

যে বান্দা আল্লাহর প্রিয় যত বেশি, তিনি তার পরীক্ষা নিয়ে থাকেন তত বেশি। যে যত বড় পরহেজগার, তার বিপদটাও তত বড় জোরদার। আর তার প্রতিদানও মহাপুরস্কার।

সাহাবি আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘একদা আমি নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গেলাম। তিনি ছিলেন ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত। আমি আমার হাত রাখলাম নবিজির গায়ে। তাঁর দেহের তীব্র তাপ অনুভব করলাম গায়ের চাদরের ওপর থেকেই।

আমি বললাম, হে আল্লাহর রসুল! আপনার তো প্রচণ্ড জ্বর। নবীজি বললেন, ‘আমাদের (নবি-রসুলগণের) অবস্থা এমনই হয়ে থাকে। আমাদের ওপর বিপদ আসে দ্বিগুণ। আর পুরস্কারও দেয়া হয় দ্বিগুণ।’ আমি বললাম, -হে আল্লাহর রসুল! কার উপর সর্বাধিক কঠিন বিপদ আসে? নবীজি বললেন, ‘নবীগণের ওপর।’ আমি বললাম, ইয়া রসুলুল্লাহ! তারপর কার ওপর? নবীজি বললেন, ‘তারপর নেককার বান্দাদের ওপর। তাদের কারো ওপর এতটা দারিদ্র্যপীড়িত হয় যে, শেষ পর্যন্ত তার কাছে পরিধানের কম্বলটি ছাড়া থাকে না কিছুই। তাদের কেউ বিপদ পড়ে এত শান্ত ও উৎফুল্ল থাকে, যেমন কেউ ধনসম্পদপ্রাপ্তিতে আনন্দিত হয়ে থাকে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪০২৪)

লেখক: আলেম, লেখক, সাংবাদিক

সর্বশেষ সংবাদ

যুদ্ধ বিরতির পর প্রথম ভাষণে যা বললেন খামেনি

দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধের পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। ভাষণে...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ