মধ্যপ্রাচ্যের অধিকৃত পশ্চিম তীরের আরিয়ালে অবৈধ ইহুদি বসতির কাছে এক ফিলিস্তিনি কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। ইহুদি সেনাদের পাঠানো বিবৃতির বরাতে বুধবার (২৭ জানুয়ারি) তথ্যটি জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনারা দাবি করে, আতাল্লাহ রাইয়ান নামের ১৭ বছর বয়সের কিশোর আরিয়ালে ইহুদি বসতির মোড়ে মোতায়েন করা ইসরায়েলি সেনাদের ওপর ছুরি দিয়ে আক্রমণের চেষ্টা করেছিলেন।
ওই বিবৃতিতে দখলদার সেনারা জানিয়েছে, সামরিক চৌকিতে দায়িত্বরত সেনারা এক হামলাকারীকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। ওই হামলাকারী দুই ইসরায়েলি সেনাকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা করে। এ সময় এক সেনা তার হামলা প্রতিহত করে এবং একজন সেনা কমান্ডার তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে তাকে নিবৃত করে।
এই ঘটনায় কোনো ইসরায়েলি সেনা হতাহত হননি বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে একটি ভিডিয়োতে এক নারী সেনার অভিযোগ শোনা গেছে। সেখানে ওই সৈনিকের পেছনটি দেখানো হয়েছে। তবে মূল ঘটনার কোনো ছবি, ভিডিয়ো বা কোনো প্রমাণ দেখায়নি তারা।
এ দিকে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, দখলদার বাহিনী গুলি চালিয়ে একজন নাগরিককে হত্যা করেছে।
ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ, গ্রেপ্তার এবং সন্দেহভাজনকে হত্যার অভিযোগ করেছে।
পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলের কারাওয়াত বানি হাসান গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন রাইয়ান। তিনি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। রাইয়ানের মা ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা মায়ানকে জানিয়েছেন, তার ছেলে স্কুল থেকে স্নাতক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন।
কান্নাভেজা কণ্ঠে তার মা জানান, গত বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সেমিস্টারের শেষ পরীক্ষা দিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে সাক্ষাত করার পরিকল্পনা করেছিলেন রাইয়ান।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) পরীক্ষা দিয়ে এসে নাস্তা করে রাইয়ান। তারপর বাবাকে সাহায্য করার পরিকল্পনা করে। অবসর সময়ে সবসময় সে বাবাকে সাহায্য করত। তবে সেটি সে করতে পারেনি। আতাল্লাহ বাড়ি ছেড়ে গেল আর ফিরে এলো না।