এশিয়ার পরাশক্তি চীনে বিস্ফোরণের শিকার একটি খনি থেকে অবশেষে ১১ জন শ্রমিককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তারা মাটির ৬শ মিটার নিচে আটকা পড়েছিলেন। রবিবার (২৪ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার খবরে ওই শ্রমিকদের জীবিত উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
টেলিভিশনের ফুটেজে প্রথম উদ্ধার হওয়া শ্রমিককে দেখা গেছে। তিনি চোখ খুলে তাকাতে পারছিলেন না। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত ১০ জানুয়ারি হুশান স্বর্ণের খনিতে বিস্ফোরণের পর থেকেই শ্রমিকরা সেখানে আটকা পড়েছিলেন। ওই খনিটি শানডং প্রদেশে অবস্থিত। দুর্ঘটনার পর থেকেই ভেতরে থাকা শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না।
পরবর্তীকালে উদ্ধারকারী দল একটি সরু টানেল দিয়ে শ্রমিকদের কাছে ওষুধ এবং খাবার সরবরাহ করেছিল। কী কারণে ওই খনির ভেতরে বিস্ফোরণ ঘটেছে তা এখনো জানা যায়নি। খনিতে বিস্ফোরণের সময় ২২ জন শ্রমিক সেখানে আটকা পড়েন। আটকে পড়া বাকি ১০ জনের অবস্থা এখন কেমন সে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়।
বেঁচে যাওয়া শ্রমিকরা উদ্ধারকারীদের জানান, তাদের অবস্থানের আরও একশ মিটার গভীরে একজন শ্রমিকের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করতে পেরেছিলেন। কিন্তু পরে তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ঝাওজিন নামের ওই খনিটি শানডং উকাইলং ইনভেস্টমেন্টের। এটি চীনের চতুর্থ বৃহত্তম স্বর্ণের খনি। চীনের বিভিন্ন খনিতে প্রায়ই এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটি ও সরকারি বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই এসব খনির কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ফলে প্রতি বছরই বহু শ্রমিক বিভিন্ন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে।
এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় চোংকিং শহরে একটি খনিতে আটকা পড়ে কমপক্ষে ১৮ জনের মৃত্যু হয়। ডায়াসুইডং কয়লা খনিটিতে মোট ২৪ জন আটকা পড়েছিল। কয়েকজনকে সেখান থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও বেশিরভাগ শ্রমিক কার্বন মনোঅক্সাইড গ্যাসের কারণে প্রাণ হারান।
গত বছরের সেপ্টেম্বরেও আরও একটি দুর্ঘটনা ঘটে। সে সময় সংজাও কয়লা খনিতে কার্বন মনোঅক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য, রবিবার সকালে প্রথমে একজনকে উদ্ধার করে উদ্ধারকারী দল। তাকে উদ্ধারের প্রায় এক ঘণ্টা পরে ওই খনি থেকে উদ্ধারকারী দলের সহায়তায় বাকি শ্রমিকরা ভেতর থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন।