বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির সিডনি টেস্ট শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ভারতীয় টেস্ট হাসপাতাল’ শীর্ষক একটি ট্রল খুব চলছে। যেখানে একাদশ সাজানো হয়েছে বিরাট কোহলি, ইশান্ত শর্মা, মোহাম্মদ শামি, উমেশ যাদব, লোকেশ রাহুল, রবীন্দ্র জাদেজা, রিশাভ পান্ত, হানুমা বিহারি, রবীচন্দ্রন অশ্বিন, জাসপ্রিত বুমরাহ ও মায়াঙ্ক আগারওয়াল- এই ১১ জনকে নিয়ে।
আসলেই তো তাই! কোহলি শুধু হাসপাতালে গিয়েছেন নিজের প্রথম সন্তানকে পৃথিবীর বুকে স্বাগত জানাত। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া সফর বা সফরের জন্য বিবেচিত বাকি ১০ খেলোয়াড়ই কোনো না কোনো চোটের কারণে একবারের জন্যও হলেও ঘুরে এসেছেন হাসপাতালের বারান্দা।
অবস্থা এখন এমন যে, আগামী শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) থেকে শুরু হতে যাওয়া গ্যাবা টেস্টে একাদশ গড়তেও যেন হিমশিম খেতে হচ্ছে ভারতকে। আগে থেকেই দলের সঙ্গে নেই বিরাট কোহলি ও ইশান্ত শর্মা। ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন মোহাম্মদ শামি, উমেশ যাদব, লোকেশ রাহুল, রবীন্দ্র জাদেজা, হানুমা বিহারি ও জাসপ্রিত বুমরাহরা।
অর্ধডজন খেলোয়াড়কে হারিয়ে ভারত যখন চাপে, তখন মজার ছলে জাতীয় দলে ফেরার ইচ্ছার কথা জানিয়ে রেখেছেন সাবেক অধিনায়ক ভিরেন্দর শেবাগ। যা বাস্তবিক দৃষ্টিতে অসম্ভব। স্কোয়াডে থাকা বাকিদের নিয়েই শেষ ম্যাচের একাদশ ঠিক করতে হবে ভারতকে। যা নিয়ে বেশ চিন্তায়ই পড়ে গেছেন অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে ও কোচ রবি শাস্ত্রী।
প্রতিপক্ষ দলের হেড কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারও কাছ থেকেই দেখছেন ভারতের এই অবস্থা। তার মতে, ইনজুরির মিছিলের দায়টা আসলে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ক্রিকেটের। কেননা প্রায় পৌনে দুই মাস লম্বা টুর্নামেন্ট খেলে তেমন একটা বিশ্রাম না নিয়েই অস্ট্রেলিয়া সফরে এসেছে ভারতের খেলোয়াড়রা। যা তাদের ইনজুরি শঙ্কা বাড়িয়েছে বহুগুণে।
শুধু ভারত নয়, আইপিএলের কারণে ভুগতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকেও। সীমিত ওভারের সিরিজে দলের অন্যতম সেরা দুই তারকা মার্কাস স্টয়নিস ও ডেভিড ওয়ার্নারকে পুরো সময়ের জন্য পায়নি স্বাগতিকরা। এমনকি টেস্ট সিরিজেও প্রথম দুই ম্যাচ খেলতে পারেননি ওয়ার্নার। তারা দুজনই নিজ নিজ দলের হয়ে খেলেছিলেন আইপিএলের পুরো আসর।
এ বিষয়ে অসি কোচ বলেন, ‘আমি আগে থেকেই বলে আসছি, ফিটনেসের দিক থেকে যারা এগিয়ে তারাই এবারের গ্রীষ্ম মৌসুমের ক্রিকেটটা ভালোভাবে খেলতে পারবে। এবারের গ্রীষ্ম মৌসুমে এত বেশি ইনজুরি আক্রান্ত হওয়াটা সত্যিই অন্যরকম। আমরা সাদা বলের সিরিজের সময় এর ভুক্তভোগী হয়েছি।’
ল্যাঙ্গার আরও যোগ করেন, ‘এ বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। তবে আমি মনে করি, এবারের আইপিএলের সূচিটা দুই দলের কারও জন্যই আদর্শ ছিল না। বিশেষ করে এত বড় একটা সিরিজের আগে। এমন না যে আমি আইপিএল অপছন্দ করি। এটা আমার কাছে কাউন্টি ক্রিকেটের মতোই। কিন্তু এবারের আসরের সময়সূচি যুতসই ছিল না।’
আইপিএল থেকে পাওয়া ইনজুরির কারণে রোহিত শর্মা ও ইশান্ত শর্মাকে দেশে রেখেই অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিল ভারত। এরপর একে একে ইনজুরিতে পড়েছেন শামি, জাদেজা, উমেশ, রাহুলরা। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া দলের ওয়ার্নার ও স্টয়নিসও দীর্ঘ আইপিএল খেলে দেশে ফিরেই পড়েছেন ইনজুরিতে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের কারণে ছয় মাস পিছিয়ে মার্চের বদলে সেপ্টেম্বরে হয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ক্রিকেটের সবশেষ আসর। তবে যথাসময়ে অর্থাৎ এপ্রিল-মে’তেই হবে ২০২১ সালের আইপিএল।