মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে কবলিত দেশ ইয়েমেনের মানবিক পরিস্থিতির বিষয়ে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। যদি চলতি বছরে জরুরিভিত্তিতে যথাযথ সহায়তা প্রদান করা না যায় তাহলে দেশটি মৃত্যুকূপে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ৪ লাখের বেশি ইয়েমেনি শিশুর (যাদের বয়স ৫ বছরের কম) পুষ্টিহীনতার কারণে মৃত্যু হতে পারে।
ইয়েমেনে সহায়তার জন্য যে পরিমাণ অর্থ জাতিসংঘ চেয়েছে তার অর্ধেক দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দাতারা। মূলত এর পরপরই এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
সোমবার (১ মার্চ) বিশ্বের দাতাদের নিয়ে একটি সম্মেলনে ইয়েমেনের মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে এমন উদ্বেগের কথা জানান গুতেরেস। সুইডেন এবং সুইজারল্যান্ডের এই সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে ইয়েমেনের জন্য ৩.৮৫ বিলিয়ন ডলার চেয়েছিল জাতিসংঘ। যদিও দাতারা ১.৭ বিলিয়ন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বিবৃতির মাধ্যমে গুতেরেস বলেছিলেন, লাখ লাখ ইয়েমেনি শিশু, নারী এবং পুরুষের বেঁচে থাকার জন্য জরুরিভিত্তিতে সহায়তা প্রয়োজন। এই সহায়তা যদি কমানো হয় তাহলে তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে দাতারা যে সাড়া দিয়েছেন তাকে ‘হতাশাজনক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘ প্রধান।
গুতেরেস দাবি করেন, যারা উদারভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। এছাড়া অন্যদের এই বিষয়টি আবারও বিবেচনা করার আহ্বান জানাচ্ছি। ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দূর করতে এটি অত্যন্ত জরুরি।
২০১৪ সালে হুথি বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর যুদ্ধ শুরু হয়। পরে সরকারি বাহিনীর পক্ষে সৌদির নেতৃত্বে হুথিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে কয়েকটি দেশ। কয়েকবছর ধরে চলা যুদ্ধে মহা বিপর্যয়ে পড়েছে সবচেয়ে দরিদ্র আরব দেশটির সাধারণ মানুষ। খাবার ও চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হচ্ছে হাজার হাজার মানুষের।
দেশটিতে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, অন্তত ১৬ মিলিয়ন (এক কোটি ৬০ লাখ) মানুষ- যা দেশটির মোট জনসংখ্যার অর্ধেক- ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে। এরই মধ্যে খাবার ও চিকিৎসার অভাবে অন্তত ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।