গ্রিসের সেলোনিকায় মুসলমানদের নামাজের জন্য নির্দিষ্ট স্থানের অনুমতির আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে গ্রিক কর্তৃপক্ষ। এর আগে গ্রিসের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটির মুসলমানদের পক্ষ থেকে মেসেডোনিয়া-থ্রেস মুসলিমস এডুকেশন কালচার ফাউন্ডেশন নামাজের জন্য একটি স্বতন্ত্র স্থানের অনুমতির জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক প্রস্তুতির পর আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করে।
আনুষ্ঠানিক আবেদনের আগে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতির প্রক্রিয়ায় দুই বছর বিলম্ব করা হয়। পরে গ্রিসের শিক্ষা ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘদিন ফেলে রাখার পর প্রয়োজনীয় দলিল ও কারিগরি বিবরণ না থাকার অজুহাতে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
ফাউন্ডেশনের সদস্যরা গ্রিক কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বলেন, গ্রিস চায় সেলোনিকা ও আশেপাশের মুসলমানরা জামায়াতে নামাজের প্রয়োজনে রাস্তায় নামাজ পড়ুক।
তারা বলেন, ‘বিদ্যমান মসজিদগুলো গ্রিস খুলে দিচ্ছে না। আবার মুসলমানদের নামাজের জন্য ভিন্ন কোনো স্থানও দিচ্ছে না। আমাদের ফাউন্ডেশনের ভেতরে নামাজের আবেদনকেও প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে আইনি নীতিমালার অজুহাতে।’
গ্রিসের মুসলিমবিরোধী অবস্থান নতুন নয়। কিছুদিন আগ পর্যন্ত এথেন্স ছিল একমাত্র ইউরোপীয় রাজধানী, যেখানে কোনো মসজিদ ছিল না। বৃহত্তর এথেন্সের তিন লাখ মুসলমানের জন্য প্রথম ২০২০ সালের নভেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি মসজিদের উদ্বোধন করা হয়। স্থানীয় মুসলমানদের বহু বছরের চেষ্টার পর ১৯ শতকের পর প্রথমবারের মতো গ্রিসে এই মসজিদটির উদ্বোধন হয়।
কয়েক শতক উসমানিয়া সাম্রাজ্যের অধীনে থাকার পর ১৮২৯ সালে গ্রিস স্বাধীনতা লাভ করে। উসমানিয়া সাম্রাজ্যের অধীন হিসেবে এই ভূখণ্ডজুড়ে অনেক মসজিদ ও উসমানি স্থাপনা ছিল। উসমানিয়াদের বিরুদ্ধে গ্রিকদের যুদ্ধের সময় এই সকল মসজিদ ও স্থাপনা ধ্বংস করা হয় বা সরিয়ে নেয়া হয়। এর মাধ্যমে এথেন্স মসজিদশূন্য হয়ে পড়ে।
গ্রিসে সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকার লঙ্ঘনে দীর্ঘদিন থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে তুরস্ক। মসজিদ বন্ধ করে দেয়া, সংস্কার না করে ঐতিহাসিক মসজিদগুলোকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া, মুসলমানদের নিজস্ব মুফতি নির্বাচনের স্বীকৃতি না দেয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে গ্রিস ১৯২৩ সালের লুজন চুক্তির সাথে সাথে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করে আসছেন তুর্কি কর্মকর্তারা।
সূত্র : ডেইলি সাবাহ