বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে ভারত সরকারের পাঠানো অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ করোনার টিকা টঙ্গিতে বেক্সিমকোর ওয়্যারহাউজে সংরক্ষণ করা হয়েছে। শিগগিরই দেশব্যাপী এই টিকা বিতরণ কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে সরকার।
মানুষের মনে যাতে এই টিকার বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে যাতে কোনো বিভ্রান্তি তৈরি না হয় সেজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দৈনিক পত্রিকাতে বিজ্ঞাপন দিয়ে তথ্য দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি পাশের দেশ ভারতে টিকা নেওয়ার পর প্রায় সাড়ে চারশো মানুষের শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
কোভিড -১৯ ভ্যাকসিন প্রথমে যাদের দেওয়া হবে-
সরকার বলছে, ন্যায্যতা ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এক্ষেত্রে সরাসরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী অগ্রাধিকার পাবেন।
জরুরি সেবাপ্রদানকারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক, সামনের সারির সেবাপ্রদানকারী, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিক, শিক্ষক ও যাদের বয়স আঠারো বছরের ওপরে তাদেরসহ জনগণকে পর্যায়ক্রমে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার আবিষ্কৃত এই কোভিশিল্ড নামের টিকা তৈরি করেছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট
ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে পৌঁছাবে বলে সরকার জানিয়েছিল এর আগে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছিল, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম ১১ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
তিনি সেই সময় বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হবে। আগে ২৫ লাখের কথা বলা হলেও এখন ৫০ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ দেওয়া হবে।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন যেভাবে পাওয়া যাবে
নিবন্ধিত ব্যক্তিদের নির্ধারিত কেন্দ্রে নির্দিষ্ট দিনে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। নিবন্ধনের জন্য বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে। এর আগে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছিল, টিকার জন্য নিবন্ধন শুরু হবে ২৬ জানুয়ারি থেকে।
বেক্সিমকোর দুইটি ওয়্যারহাউজ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তালিকা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জেলায় টিকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে করণীয়
সরকার বলছে, কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন একটা নিরাপদ ভ্যাকসিন। তবে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে কারো কারো ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
যেমন ভ্যাকসিন প্রয়োগের জায়গায় ফুলে যাওয়া, সামান্য জ্বর হওয়া, বমি বমি ভাব, মাথা ও শরীর ব্যাথা। এ লক্ষণগুলো দুই একদিন থাকতে পারে।
এসব ক্ষেত্রে করণীয় হল:
- ভ্যাকসিন নেওয়ার পর যে কোনো শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে নির্ধারিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র/স্বাস্থ্যকর্মী/চিকিৎসকের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করুন।
- ভ্যাকসিন নেওয়ার পর টিকা কেন্দ্রে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন
- ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাভাবিক জীবন যাপন করুন।