: প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) দুর্নীতির ৩৯ কোম্পানির ৮৩ ব্যক্তির শতাধিক হিসাব জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সহায়তায় এসব হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
জব্দকৃত হিসাবের মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, এফএএস লিজিং ও পিপলস লিজিং থেকে ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ন্যাচার এন্টারপ্রাইজ ও এমটিবি মেরিন লিমিটেডের মালিক নওশের উল ইসলামের নামে থাকা ৯৫২ কোটি টাকা এবং তার স্ত্রী মমতাজ বেগমের নামে লোপাটকৃত ২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে।
এ ছাড়া এমটিবি মেরিন লিমিটেডের অন্য মালিক বাসুদেব ব্যানার্জির নামে ৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ও ন্যাচার এন্টারপ্রাইজের মালিক পাপিয়া ব্যার্নাজির নামে ৬১ লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে নওশের উল ইসলাম, তার স্ত্রী মমতাজ বেগম, এমটিবি মেরিন লিমিটেডের অন্য মালিক বাসুদেব ব্যার্নাজি ও ন্যাচার এন্টারপ্রাইজের মালিক পাপিয়া ব্যার্নাজিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হলেও দুদকের ডাকে সাড়া দেননি তারা।
তবে আলোচিত পি কে হালদার চক্রের প্রায় ৩৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অর্ধশত কর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। দুদক সূত্রে জানা যায়, নওশের ইসলাম ভুয়া কোম্পানির নামে ঋণ দেখিয়ে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, এফএএস লিজিং ও পিপলস লিজিং থেকে ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কয়েক বছরে তার একাধিক হিসাবে ৩ হাজার ৫২০ কোটি টাকা জমা করেন।
যার মধ্যে উত্তোলন করেন ২ হাজার ৪৩২ কোটি। কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর দুদকের উদ্যোগে ৯৫২ কোটি টাকা জব্দ করা হয়েছে। একইভাবে নওশের ইসলামের স্ত্রী মমতাজ বেগম ভুয়া কোম্পানির নামে ঋণ দেখিয়ে কয়েক বছরে তার একাধিক হিসেবে ৪ কোটি টাকা জমা করেন। যার মধ্যে ২.৫ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। আর দুদক ২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা জব্দ করেছে।
অন্যদিকে বাসুদেব ব্যানার্জি ভুয়া কোম্পানির নামে ঋণ দেখিয়ে তার একাধিক হিসাবে জমা করে ৭৬৪ কোটি টাকা এবং উত্তোলন করে ৪৬২ কোটি। তার হিসাবে থাকা ৪.৬৪ কোটি টাকা জব্দ করেছে দুদক। অন্যদিকে পাপিয়া ব্যানার্জি কয়েক বছরে ভুয়া কোম্পানির নামে ঋণ দেখিয়ে তার একাধিক হিসাবে জমা করেন ৫ কোটি ৩৫ লাখ এবং উত্তোলন করেন ৩৪ কোটি টাকা। তার হিসাবে থাকা ৬১ লাখ টাকা জব্দ হয়েছে দুদকের অনুরোধে।
এ বিষয়ে দুদক উপপরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার প্রধান বলেন, অনুসন্ধানের স্বার্থে আমাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে হয়। পি কে হালদারের বিষয়ে উচ্চ আদালতেরও পর্যবেক্ষণ রয়েছে। এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।