আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভারত সরকার কোভিড-১৯ টিকা রপ্তানির ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর সুভ্রামনিয়াম। টিকা সংগ্রহে প্রতিবেশী নানা দেশের সরকার যখন ব্যস্ত, ঠিক সেসময় আজ মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) তিনি একথা জানান।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকা এবং লাইসেন্স ভিত্তিক ওষুধ উৎপাদক হচ্ছে ভারত। কোভিড-১৯ টিকা উৎপাদনেও দেশটি বৈশ্বিক কেন্দ্র হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার উপর নির্ভর করছে বাংলাদেশ-সহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে টিকাদানের উদ্যোগ।
এঅবস্থায় জয়শঙ্কর রয়টার্সকে জানান, নিজ জনগণকে সঠিক সময়ে টিকা দিতে বিদেশী সরকারগুলোর উদ্বেগ ভারত বুঝতে পারছে।
“খুব শিগগির আমরা নিজ দেশে টিকার বিতরণ এবং ব্যবহারিক চাহিদা সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পাব। একইসঙ্গে, বৈশ্বিক ভূমিকা পালনেও আমরা সচেষ্ট থাকব,” তিনি জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে লেখা এক চিঠিতে সেরাম ইনস্টিটিউড উৎপাদিত অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রাজেনেকা’র কোভিড-১৯ টিকার একটি চালান দ্রুত ছাড়করণের অনুরোধ করেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারো।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, আগামী ২৫ জানুয়ারি সেরামের কাছ থেকে টিকার প্রথম চালান পাওয়া যাবে।
আগামী সপ্তাহে (শনিবার) থেকে শুরু হচ্ছে ভারতে প্রথম ধাপের টিকাদান কার্যক্রম। জয়শঙ্কর জানান, ভারতকে নিজ জনগণ এবং বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর চাহিদার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। মঙ্গলবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে যুক্ত হয়ে তিনি একথা বলেছেন।
“ভারতে টিকাদান শুরু করা আমাদের নীতি অগ্রাধিকার। এব্যাপারে নিজস্ব অনেক বাধা-বিপত্তি নিয়েও সরকারকে ভাবতে হচ্ছে,” বলেন জয়শঙ্কর ।
তিনি আরও জানান, “অনেক দেশ আমাদের সঙ্গে টিকা পেতে যোগাযোগ রক্ষা করছে। কিন্তু, আমরা তাদের বলেছি, এটা উৎপাদিত টিকার চালান পাওয়ার প্রথম মাস। ধীরে ধীরে উৎপাদনের গতি বাড়বে। সেই অনুসারে, (স্থানীয় চাহিদা মেটাতে) নির্দিষ্ট পরিমাণ ডোজের মজুদ হিসাব করতে হবে।
অক্সফোর্ড/ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি কোভিশিল্ড নামে বাজারজাত করছে সেরাম ইনস্টিটিউড। এর বাইরে স্থানীয়ভাবে পরীক্ষাধীন ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন টিকাকেও অনুমোদন দিয়েছে দেশটি।
জয়শঙ্কর জানান, আরও চারটি টিকা বর্তমানে পরীক্ষাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে রাশিয়ায় তৈরি স্পুটনিক-ভি টিকা এবং জায়ডাস ক্যাডিলার জায়কোভ-ডি ভ্যাকসিনের ট্রায়ালও চলছে।
তিনি দাবি করেন, ভারত মহামারী নিয়ন্ত্রণে সফল হয়ে ইতোপূর্বে যেমন ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে।
সূত্র: রয়টার্স