সিরাজগঞ্জে শিশু গৃহকর্মীকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগে সিরাজগঞ্জ সরকারী কলেজের দর্শন বিভাগের লেকচারার শিউলী মল্লিকাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৯ জানুয়ারি) রাত ৮ টার দিকে শহরের ফজল খান রোডের ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ বাহা উদ্দিন ফারুকী জানায় ,গত ৭ জানুয়ারি শিউলি মল্লিকা গৃহকর্মী শিশু মিনতি খাতুন (১০) হারিয়ে গেছে মর্মে সিরাজগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। এরপর ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় শিশু মিনতিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, শিক্ষিকা শিউলি মল্লিকা অমানবিক নির্যাতন সইতে না পেরে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় এবং মিনতির শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
মিনতির ভাষ্যমতে, প্রতিদিন তাকে নির্যাতন করা হতো। মিনতির বাবা মক্কা ও মা মমতা মারা গেছে মিনতির ৬ মাস বয়সে। সে গৃহকর্মী নানী রহিমা খাতুনের কাছে বড় হয়। নানীর অভাবের সংসারে খাবার না পেয়ে ৯ বছর বয়সে গৃহকর্মীর কাজে আসে সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালের ডাক্তার নুরুল ইসলাম ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী সিরাজগঞ্জ সরকারী কলেজের দর্শন বিভাগের শিক্ষিকা শিউলি মল্লিকার শহরের ফজল খাঁন রোডের বাসায়। গৃহকর্মী হিসেবে কাজে যোগদানের মাস খানেক পর থেকেই শিউলি মল্লিকা শিশু মিনতির ওপর অমানবিক নির্যাতন করতো। এক পর্যায়ে গত ৭ জানুয়ারি শিউলির নির্যাতন সইতে না পেরে এতিম মিনতি বাসা থেকে বের হয়ে যায়। অসুস্থ শরীর আর চোখের পানি দেখে সন্ধ্যায় কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট গ্রামের জাহানারা নামে এক মহিলা মিনতিকে উদ্ধার করে চিকিৎসা ও খাবার দেয়।
পরে পুলিশকে খবর দিয়ে মিনতিকে পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দেয়। খবর পেয়ে মিনতির অভিভাবক খালু আবুল কাশেম বাদী হয়ে মামলা করেন। পুলিশ তাৎক্ষনিক শিক্ষিকা শিউলি মল্লিকাকে গ্রেপ্তার করে।
অফিসার ইনচার্জ বাহা উদ্দিন ফারুকী আরও জানান,শিউলির স্বামী ডা. নুরুল ইসলাম তার স্ত্রী শিশু মিনতিকে প্রতিনিয়তই নির্যাতন করতো বলে স্বীকার করলেও স্ত্রীকে পুলিশ হেফাজত থেকে ছাড়াতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।
অপরদিকে নির্যাতিত শিশু গৃহকর্মী মিনতিকে উদ্ধারের পর পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম তাকে চিকিৎসা সেবা, শীতের পোশাকসহ সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে পুলিশি নিরাপত্তায় রাখার জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।