spot_img

ট্রাম্পের ক্ষমতা আর মাত্র ১৪ দিন

অবশ্যই পরুন

মরিয়া চেষ্টাতেও কাজ হলো না। গতকাল বুধবার (৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় রাতে নির্বাচনী ফলাফলকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা। এর প্রেক্ষিতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা দেশটির পার্লামেন্টে অনুপ্রবেশের মতো উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে।  

এঅবস্থায় আগামী ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের মেয়াদ সম্পন্ন হওয়া এবং নব-নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের শপথ নেওয়ার আগেই ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের ডাক দিয়েছে দেশটির রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। কিছু ডেমোক্রেট আইনপ্রণেতার পাশাপাশি জনতার বড় একটি অংশ এ পদক্ষেপের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনাও করছে।   

অনুতাপ ও সৌজন্য ট্রাম্পের চরিত্রে নেই। এরআগেও তিনি রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে সহিংসতা উস্কে দেওয়ার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন। বুধবার তার ব্যতিক্রম হয়নি। ট্রাম্প প্রথমে পরাজয় স্বীকার করতে অস্বীকার করেন। আর তার মিথ্যাচারে সাড়া দিয়ে আগে থেকেই রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি’তে সমবেত হওয়া তার সমর্থকেরা পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ে। 

 

ইতোপূর্বে, নির্বাচনে তারই জয় হয়েছে এমন বিশ্বাসে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন ট্রাম্প। দাবি করেন, জালিয়াতির মাধ্যমে তার বিজয়কে পরাজয়ে রূপ দেওয়ার। সেখান থেকেই বিশৃঙ্খলতার সূত্রপাত।    

এসব ঘটনার পরই ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট পদে শেষ কদিন রাখাও নিরাপদ কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সর্বোচ্চ দপ্তরের জন্য অনুপযুক্ত ঘোষণার পাশপাশি তাকে অপরাধী আইনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবিও উঠছে। 

এই অবস্থায় তাকে অব্যাহতি দেওয়ার দুটি উপায় আছে। একটি হচ্ছে মার্কিন সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে; এব্যাপারে পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ সিনেটের অভিশংসন নির্ণয়। তবে সিনেটে রিপাবলিকানদের বলিষ্ঠ প্রতিনিধিত্ব থাকায় দ্বিতীয় পথটি এই স্বল্প সময়ে হয়তো সম্পন্ন করা যাবে না। 

আর সেটি করা হলে, বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের আগে ট্রাম্পের স্থলাভিষিক্ত হবেন তার ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। 

বেশ কয়েকজন ডেমোক্রেট রাজনীতিক অবশ্য দুটি প্রক্রিয়াই অনুসরণের কথা জানিয়েছেন। অধিকাংশে ২৫তম সংশোধনীর প্রয়োগ নিয়ে উৎসাহী হলেও, মিনেসোটা থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রেট দলীয় কংগ্রস সদস্যা ইলহান ওমর বলেছেন, তিনি ট্রাম্পকে অভিশংসনের জন্য দরকারি নথি প্রস্তুত শুরু করেছেন।  

দেশটির প্রভাবশালী দুটি দৈনিক দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং ওয়াশিংটন পোস্টও সাম্প্রতিকতম কর্মকাণ্ডের পরিণতিস্বরূপ ‘ট্রাম্প হটাও’ কার্যক্রমকে সমর্থন করেছে। 

২৫তম সংশোধনী কী এবং তা কীভাবে কাজ করে তা তুলে ধরা হলো:

১৯৬৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট খ্যাত জন এফ কেনেডি গুপ্তঘাতকের হাতে প্রাণ হারানোর পর ১৯৬৭ সালে ২৫তম সংশোধনী গৃহীত হয়। কোনো কারণে দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি অযোগ্য বা অক্ষম হলে তখন তার উত্তরসূরি কে হবেন- সেটাই নির্ধারণ করে সংবিধানের এই সংযোজন।

সংশোধনীর ৪ নং অনুচ্ছেদে প্রেসিডেন্ট যদি সুষ্ঠুভাবে নিজের দায়িত্ব সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হওয়ার পরও ক্ষমতা ছাড়তে রাজি না হন- তেমন পরিস্থিতিতে যা করতে হবে সে সম্পর্কেও বলা আছে। 

সাংবিধানিক আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, শারীরিক ও মানসিক কারণে কোনো রাষ্ট্রপতি অক্ষম হলেই তখন এ আইন প্রয়োগের প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল এর প্রস্তাবকদের। তার ভিত্তিতে কিছু পণ্ডিত মনে করছেন, সর্বোচ্চ পদের জন্য বিপজ্জনক কোনো প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রেও এই একই বিধিমালা খাটবে। 

কিন্তু, সমস্যাটা অন্যখানে। ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগের আগে পেন্সসহ ট্রাম্পের মন্ত্রীসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশকে তার বিরুদ্ধে অযোগ্যতার ঘোষণা দিতে হবে। তারপর সেই স্থানে পেন্স ক্ষমতা গ্রহণ করতে পারবেন।  

তবে নিজেকে যোগ্য ঘোষণার সুযোগ ট্রাম্পও পাবেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রীদের সিংহভাগ তার পক্ষে থাকলে তখনই ন্যায্যতা পাবে তার দাবি। ফলে তিনি নির্বিঘ্নে বাকি মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবেন। তবে তারা ট্রাম্পের বিপক্ষে অবস্থান নিলে তার সুরাহা করবে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ বা কংগ্রেস। তার আগপর্যন্ত অবশ্য পেন্স অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট পদে থাকবেন। কংগ্রেসের নির্ণয় তার পক্ষে গেলে তখন পেন্সই হবেন নতুন রাষ্ট্রপতি। 

এজন্য কংগ্রেসের উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। তবে কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ হাতে থাকায় ডেমোক্রেটরা ইচ্ছে করেই এ প্রক্রিয়ায় দেরি করে নির্বিঘ্নে পেন্সকে দায়িত্ব পালনের সুযোগ করে দিতেও পারবেন,বলে জানান পল কাম্পুস। তিনি কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবিধানিক আইনের একজন অধ্যাপক।  
 
কাম্পুসের মতে, ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ২৫তম সংশোনীর আশ্রয় নেওয়ায় হবে শ্রেষ্ঠ উপায়। এতে অভিশংসনের চাইতে দ্রুত তাকে অপসারণের সুযোগ মিলবে।

এর সাহায্যে “পেন্স সঙ্গেসঙ্গেই প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন, অন্যদিকে অভিশংসন এবং তার অংশ হিসেবে ট্রাম্পকে অযোগ্য নির্ণয়ের সিনেট প্রক্রিয়ায় রয়েছে অনেক জটিল অনিশ্চয়তা,” তিনি যোগ করেন।  

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান 

সর্বশেষ সংবাদ

গুঞ্জন উড়িয়ে ম্যানসিটিতে আরও ২ বছর থাকছেন পেপ গার্দিওলা

গুঞ্জন ছিল ম্যানচেস্টার সিটি ছেড়ে ব্রাজিলের দায়িত্ব নিতে পারেন কোচ পেপ গার্দিওলা। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের কষ্ট দিয়ে বৃহস্পতিবার (২১...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ