পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ৯ আসামি আপিল করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪৫ পৃষ্ঠার আপিল আবেদন জমা দেন বলে জানা গেছে।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া যে ৯ আসামি আপিল করেছেন তারা হলেন; কামাল মোল্লা, মনিরুজ্জামান, ইউসুফ আলী, আবু সাঈদ আলম সাঈদুর রহমান, আনিসুজ্জামান, ফজলুল করিম ও বজলুর রশীদ। বাকি আরেক আসামির নাম জানা সম্ভব হয়নি।
এর আগে এই হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে খালাস পাওয়া ৭৫ জন এবং সাজা কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ৮ জনসহ মোট ৮৩ জনের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ সর্বোচ্চ আদালতে পৃথক ২০টি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর-এর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তর পিলখানায় বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। সেদিন সেখানে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। দুই দিন ধরে চলা ওই বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।
নৃশংস ওই হত্যাযজ্ঞের ঘটনার তিন দিন পর ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়। যা পরে নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর হত্যা মামলার রায় দেন বিচারিক আদালত। সেই মামলায় ৮৪৬ জনকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। রায়ে ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২৫৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়। আর খালাস পান ২৭৮ জন।
দেশের ইতিহাসে আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটিই সবচেয়ে বড় হত্যা মামলা। বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি দণ্ডিত আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষ খালাস পাওয়া ৬৯ জনের ক্ষেত্রে পৃথক আপিল করে।
সে সব আপিলের শুনানি নিয়ে তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন।
হাইকোর্টের ওই রায়ে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় ২২৮ জনকে।