আগামী কয়েক মাসের জন্য ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটকে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের রপ্তানি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে দরিদ্র দেশগুলোকে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজের জন্য আরো কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হতে পারে।
যে কারণে ভ্যাকসিন রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা-
আজ (সোমবার) দুপুরে ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধের বিষয়ে সেরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়ালা আনন্দবাজারকে জানান, কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিসিজিআই সেরাম ইনস্টিটিউটকে ইতিমধ্যে অক্সফোর্ডের টিকা নিয়ন্ত্রিত ও জরুরি ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র দিয়েছে। সেই কারণে সংস্থা প্রথমেই টিকা বেসরকারি সংস্থার হাতে পৌঁছে দিতে পারবে না। পাশাপাশি, বিদেশে রফতানিও করা যাবে না।
প্রাথমিকভাবে শুধু সরকারের কাছেই টিকা পৌঁছে দিতে হবে সংস্থাকে। তবে টিকার বিশ্বাসযোগ্যতাকে জনমানসে আরো প্রতিষ্ঠা দেওয়ার জন্য আদর পুনাওয়ালা নিজে দ্রুত করোনার টিকা নেবেন বলেও জানান তিনি।
বেসরকারি সংস্থা ভ্যাকসিন কখন পাবে-
আদর পুনাওয়ালা জানান, মার্চ মাসে বেসরকারি হাসপাতাল ও সংস্থার হাতে এসে পৌঁছাতে পারে করোনার টিকা। করোনা টিকা দেওয়া শুরু হওয়ার পর ৫-৬ কোটি কোভিশিল্ডসরকারের নির্দেশিকা মতো দেওয়া হবে। তারপর মার্চ মাসে বেসরকারি সংস্থা ও হাসপাতালের হাতে পৌঁছে দেওয়া হতে পারে টিকা, খবর এমনই।
রপ্তানি শুরুর আগেই ভারত সরকারকে ১০ কোটি টিকা দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে তারা। কিন্তু এই মুহূর্তে তারা রপ্তানি করতে পারবে না, যেহেতু তাদের রপ্তানির অনুমতি নেই।
বাংলাদেশ আগামী মাসের শুরুতে যে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে সেটি এই সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকেই পাওয়ার কথা। প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ হিসেবে পুরো তিন কোটি টিকার জন্য অগ্রিম হিসেবে ৬শ কোটি টাকা সেরামের অ্যাকাউন্টে রবিবার জমাও দেওয়ার কথা জানিয়েছিল বাংলাদেশের সরকার।
সেরাম ইনস্টিটিউট টিকা রপ্তানি করতে পারবে না এমন খবরে বাংলাদেশে উদ্বেগ তৈরি হওয়ার পর ঢাকায় দিল্লির হাইকমিশন এবং দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সকাল থেকেই যোগাযোগ করছিল।
দুপুরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মান্নান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, টিকার ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যেহেতু জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) চুক্তি হয়েছে সেহেতু বাংলাদেশের যথাসময়ে টিকা পেতে কোনো সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, আমার এইমাত্র ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, আমরা যে চুক্তি করেছি, সেখানে আর্থিক লেনদেন হয়েছে দুই সরকারের মধ্যে। ভারত যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা তাদের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে, আমাদের ব্যাপারে না। হাইকমিশন থেকে এটা পরিষ্কার করে দিয়েছে।