মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শিকাগো শহরে ৩০০ ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছেন। শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে উল্লেখ করে তিনি এই বিতর্কিত পদক্ষেপ নিলেন। এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে ডেমোক্র্যাট-শাসিত রাজ্য ও শহরের নেতাদের মধ্যে। ইলিনয়ের গভর্নর জেবি প্রিটজকার অভিযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্ট ইচ্ছাকৃতভাবে একটি কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন।
ট্রাম্পের এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো, যখন ফেডারেল বিচারক কারিন ইমারগুট পোর্টল্যান্ডে রাজ্যের সম্মতি ছাড়া সেনা মোতায়েনকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান পরিপন্থী এবং রাজ্যের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত বলে রায় দিয়েছেন। বিচারকের মতে, এ ধরনের মোতায়েন শান্তি ফেরানোর বদলে বিক্ষোভ বাড়িয়ে তোলে এবং এটি বেসামরিক ও সামরিক ক্ষমতার সীমারেখা ঘোলাটে করে, যা জাতির জন্য ক্ষতিকর।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যাবিগেল জ্যাকসন জানান, ‘চলমান দাঙ্গা ও বিশৃঙ্খলার পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প ফেডারেল সম্পদ ও অফিসারদের রক্ষায় ৩০০ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের অনুমতি দিয়েছেন।’ ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির বিবৃতিতে বলা হয়, সেনা মোতায়েনের ঠিক আগের দিন শিকাগোয় অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভকারীরা আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর গাড়ির ওপর গাড়ি তুলে দেন। এছাড়া এক নারী সশস্ত্র ছিলেন দাবি করে তাঁকে গুলি করা হয়।
যদিও ট্রাম্প বারবার শিকাগোয় অপরাধ বৃদ্ধির কথা বলে সেনা মোতায়েনের হুমকি দিয়ে আসছিলেন, তবে পরিসংখ্যান বলছে, গত দুই বছরে শহরটিতে সহিংস অপরাধ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ফৌজদারি বিচার কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত খুনের হার গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ হ্রাস পেয়েছে। তা সত্ত্বেও, গত মাসে শ্রমিক দিবসের ছুটির সপ্তাহান্তে শহরে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন অন্তত ৫৮ জন।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ আইনত বিতর্কিত এবং রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর, যা কেন্দ্র ও রাজ্যের ক্ষমতার ভারসাম্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কাঠামো নিয়ে বড় ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
সূত্র: বিবিসি