আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হচ্ছে পেট বা অন্ত্র। এটি ভালো থাকলে পুরো শরীর ভালো থাকে। সেজন্য পেট ভালো রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন এআইআইএমএস, হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ডা. সৌরভ শেঠি। স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের জন্য সকালের অভ্যাস নিয়ে পরামর্শ দেন।
ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, কফির আগে গরম পানি খাওয়া উচিত। এটি হজম প্রক্রিয়া ও মলত্যাগ উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে। হজমে সহায়তা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আদা চা বা লেবুর পানি খেতেও পারেন। অন্ত্রের সুস্থতার জন্য সকালের প্রথম ঘণ্টাগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
এই সময় সঠিক অভ্যাস গড়ে তুললে শুধু হজম নয়, মন-মেজাজও ভালো থাকবে সারা দিন।
ডা. শেঠির পরামর্শ, হালকা হাঁটা বা যোগব্যায়ামের মতো স্বাভাবিক নড়াচড়া হজম প্রক্রিয়া সক্রিয় করে। উচ্চ ফাইবার ও প্রোটিনযুক্ত নাস্তা অন্ত্রের স্বাস্থ্যে সহায়ক এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরাট রাখে। এ ছাড়া তিনি আরো পরামর্শ দিয়েছেন।
চলুন, সেগুলো জেনে নিই—
১. কফির আগে গরম পানি পান করুন। গরম পানি অন্ত্রকে জাগিয়ে তোলে, হজমতন্ত্রকে প্রস্তুত করে এবং মলত্যাগ সহজ করে।
২. সকালে হালকা শারীরিক নড়াচড়া (হাঁটা, যোগব্যায়াম) করুন। হালকা হাঁটা, স্ট্রেচিং বা যোগব্যায়াম অন্ত্রের কার্যকলাপ বাড়ায় এবং শরীরকে উদ্যমী করে।
৩. উচ্চ ফাইবারযুক্ত নাস্তা খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৪. ওটস, ফল, সবজি বা দানাশস্য—এসব খাবার পেট পরিষ্কার রাখতে কাজ করে।
৫. প্রোটিনযুক্ত নাস্তা খান। ডিম, ডাল বা গ্রিক ইয়োগার্ট—প্রোটিন দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখবে ও রক্তের সুগার স্থিতিশীল রাখবে।
৬. খাওয়ার সময় ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। এই সময় মোবাইল ব্যবহার ও সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রলিং মানসিক চাপ বাড়ায় এবং হজম ব্যাহত করে।
৭. আদা চা বা লেবুর পানি পান করুন। এটি হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে, বমিভাব কমায় এবং ইমিউন সিস্টেমকে সহায়তা করে।
৮. চিনি-সমৃদ্ধ সিরিয়াল এড়িয়ে চলুন। এগুলো ব্লাড সুগার দ্রুত বাড়ায় এবং কমায়। ফলে ক্লান্তি ও ক্ষুধা বেড়ে যায়।
৯. সকালের সূর্যের আলো গায়ে লাগান। ভিটামিন ডি শুধু হাড় নয়, অন্ত্রের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
১০. কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে ইসপগুলের ভুসি খান। এটি প্রাকৃতিকভাবে মল নরম করে এবং অন্ত্রের গতি স্বাভাবিক রাখে।
সবশেষে বলা যায়, অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে আপনার ঘুম, মুড, ইমিউনিটি—সব কিছুই উন্নত হবে। তাই দিনের প্রথম ঘণ্টাগুলোকে সোনার সময় হিসেবে ব্যবহার করুন।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস