১২ জুন লন্ডনে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান ভারতীয় শিল্পপতি এবং বলিউড অভিনেত্রী কারিশমা কাপুরের প্রাক্তন স্বামী সঞ্জয় কাপুর। অটো নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সোনা কমস্টারের প্রধান হিসেবে ব্যবসায়িক জগতে পরিচিত এই শিল্পপতি বেশ পরিচিত নাম ছিলেন। মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর ১৯ জুন তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। আর ২২ জুন দিল্লির তাজ প্যালেসে আয়োজন করা হয় তার স্মরণে প্রার্থনা সভা।
সঞ্জয়ের মৃত্যু যেমন পরিবারে শোকের ছায়া ফেলেছে, তেমনি সামনে এনেছে এক করুণ পারিবারিক সত্য। জানা গেছে, মৃত্যুর আগে চার বছর ধরে নিজের বোন মন্দিরা কাপুরের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ রাখেননি সঞ্জয়। এমনকি শেষ দিনগুলোতেও দুই ভাইবোনের মধ্যে হয়নি কোনো কথাবার্তা।
সম্প্রতি মন্দিরা কাপুর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন একটি পোস্ট করে এই দূরত্বের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি লেখেন, গত চার বছর ধরে আমি ও আমার ভাই পরস্পর কথা বলিনি। ভাইবোনদের মধ্যে ছোট্ট একটা সমস্যা বড় আকার নিয়েছিল শুধুমাত্র আমাদের অহংবোধের কারণে। কিন্তু আমাদের সম্পর্ক এই সমস্যার জন্য কখনওই মিথ্যে হয়ে যেতে পারে না।
ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করে মন্দিরা আরও লেখেন, আমরা দারুন সময় কাটিয়েছি ছোটবেলায়। অসাধারণ বাবা-মা পেয়েছিলাম। আমরা কত গোপন কথা ভাগ করে নিতাম, রাত পর্যন্ত জেগে থাকতাম, আবার রাত হলে চুপি চুপি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতাম। আমাদের তিন ভাইবোনের মধ্যে কত মজাই না হত!
তিনি জানান, তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন যতই থাকুক, হৃদয়ে ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা কখনও ম্লান হয়নি। শেষে যা হল, তা সাংঘাতিক। দুঃখের বিষয়, আর ওর সঙ্গে কখনওই কথা হবে না। তবে আমি জানি, এত কিছুর পরেও সঞ্জয় জানত, আমি ওকে কতটা ভালবাসি। ওর কথা খুব মনে পড়ছে। ওকে আর এই জীবনে দেখতে পাব না, এটা মেনে নেওয়াই খুব কঠিন। ও এখন বাবার সঙ্গে রয়েছে। খুব শীঘ্রই আমাদেরও দেখা হবে।
স্মৃতিচারণার এক পর্যায়ে মন্দিরা লিখেছেন, শেষবারের মতো ভাইকে দেখতে যে কোনও মূল্য দিতে আমি রাজি। ওকে বলতে চাই, কতটা ভালোবাসি।
সঞ্জয়ের প্রার্থনা সভায় উপস্থিত ছিলেন তার প্রাক্তন স্ত্রী কারিশমা কাপুর, অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খান, সাইফ আলি খান ও নেহা ধুপিয়া। এছাড়া সঞ্জয়ের তৃতীয় স্ত্রী প্রিয়া সচদেবকেও এই প্রথমবারের মতো ক্যামেরার সামনে আসতে দেখা যায়—সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর এটিই তার প্রথম জনসম্মুখে উপস্থিতি।