আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পূর্ব ইউরোপে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শান্তির বার্তা দিয়েছেন, পাশাপাশি রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন। কিন্তু এরই মধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কুরস্ক শহরে ইউক্রেন বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন, যা ইউরোপে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিন আধিকারিকদের আলোচনা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, যুদ্ধবিরতির এই উদ্যোগ ব্যর্থ করে দিতে চান পুতিন। তিনি সেই চেষ্টাই চালাচ্ছেন। ট্রাম্প অবশ্য পুতিনের উপর আস্থা রেখেছেন। কুরস্কে ইউক্রেন সেনাদের যাতে হত্যা না-করা হয়, সেই অনুরোধও জানিয়েছেন।
দেশের পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে গত আগস্টে রাশিয়ায় ঢুকে পড়েছিল ইউক্রেন বাহিনী। কুরস্কসহ বেশ কিছুটা অংশ তারা দখলও করে নিয়েছিল। গত সপ্তাহ থেকে কুরস্কে প্রত্যাঘাত করেছে রাশিয়া। আক্রমণের ঝাঁজ বাড়িয়ে দিয়েছেন পুতিন। ওই শহরে ইউক্রেন সেনাদের ঘিরে ফেলেছে রুশ বাহিনী। কুরস্কের পরিস্থিতি নিয়ে জেলেনস্কি এবং ট্রাম্প উভয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সেনা কুরস্কে আটকে পড়েছেন। আমি পুতিনকে অনুরোধ করেছি, ওদের যেন প্রাণে মেরে না-ফেলা হয়। যদি হয়, তবে তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সবচেয়ে বড় গণহত্যা হবে।’’
পুতিন জানান, ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির আলোচনায় তিনি আগ্রহী। কিন্তু কুরস্কে ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে। এখনো পর্যন্ত জেলেনস্কি তাতে নারাজ। এই পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের প্রতিনিধি পুতিনের সঙ্গে দেখা করেন। ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
তবে, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশ পুতিনের নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চুক্তি নিয়ে ছেলেখেলা করছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। আমরা সেটা হতে দিতে পারি না। পুতিন শান্তি চায় না, তিনি যুদ্ধবিরতি বিলম্বিত করতে চাইছেন।”
এদিকে, ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়ে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ—বিশেষত ব্রিটেন ও ফ্রান্স—এখন ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যা পরিস্থিতির উত্তপ্ত হওয়া আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।