spot_img

রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষায় অগ্রাধিকার দিতে হবে : ইউএনএইচসিআর

অবশ্যই পরুন

মানুষের প্রাণরক্ষায় পদক্ষেপ নিতে দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) সংস্থাটির এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক ব্যুরোর পরিচালক হেই কিয়ুং জুন বলেন, ‘প্রাণরক্ষাকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে।’

এমন এক সময় তিনি এমন মন্তব্য করেন, যখন প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা প্রতিবেশী ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছেন। কয়েক সপ্তাহ সাগরে নৌকায় ভেসে থাকার পর সম্প্রতি এসব দেশে পৌঁছান নারী ও শিশুসহ ৪৬০ রোহিঙ্গা।

এর মধ্যে ৩ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় ১৯৬ জন ও ৫ জানুয়রি ২৬৪ রোহিঙ্গা ইন্দোনেশিয়ার তীরে ভিড়েন। সাগরপথে এই দুঃসহ যাত্রায় অন্তত ১০ রোহিঙ্গার প্রাণহানি ঘটেছে। সপ্তাহ তিনেক আগে শ্রীলঙ্কায় মাটিতে নামেন আরো ১১৫ রোহিঙ্গা। এ সময়ে ১০ জনকে তারা সাগরেই হারিয়ে আসেন।

হেই কিয়ুং জুন বলেন, ‘এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের সরকার এই ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের আশ্রয় দিতে যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা প্রশংসাযোগ্য। তাদের রক্ষায় এসব সরকার ও স্থানীয় প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে আমরা প্রস্তুত আছি।’

নিজ দেশ মিয়ানমারে নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়ে জীবন বাঁচাতে সাগরপথে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিচ্ছেন রোহিঙ্গারা। সাধারণত অক্টোবর থেকে এপ্রিলের মধ্যে তারা এসব দেশে পাড়ি জমান। কারণ তখন সাগর শান্ত থাকে, জীবনের ঝুঁকিও কম থাকে।

গেল বছরে সাত হাজার ৮০০ রোহিঙ্গা সাগরপথে নৌকায় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ২০২৩ সালের তুলনায় যা আশি শতাংশ বেড়েছে। এই ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় সাড়ে ৬০০ রোহিঙ্গা মারা গেছেন কিংবা পথে নিখোঁজ হয়েছেন।

এই বিপজ্জনক নৌযাত্রায় শিশুদের অংশগ্রহণও বাড়ছে, তারা মোট যাত্রীর ৪৪ শতাংশ। ২০২৩ সালের তুলনায় পরের বছরে ৩৭ শতাংশ বেশি শিশু মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এরই মধ্যে নারীদের সংখ্যাও বেড়ে প্রায় এক তৃতীয়াংশ হয়েছে।

ইউএনএইচসিআর বলছে, গেল বছরে নতুন একটি প্রবণতা যুক্ত হয়েছে। বর্ষার মৌসুমে ভয়াবহ বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যেও কয়েক হাজার রোহিঙ্গা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করেন। এমনটা আগে কখনো দেখা যায়নি। কারণ দেশ থেকে পালানোর জন্য বর্ষা মৌসুমকেই নিরাপদ মনে করেন রোহিঙ্গারা।

সাগরেই ঠেলে দেয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাবাহী নৌকা
হেই কিয়ুং জুন বলেন, যদিও নিজেদের সীমান্ত ও নিয়মবহির্ভূত চলাচল নিয়ন্ত্রণের বৈধ অধিকার আছে দেশগুলোর- বিশেষ করে চোরাচালান ও মানবপাচাররোধে। কিন্তু এসব পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে নিরাপদ স্থানে পৌঁছাতে মানুষের অধিকারেরও নিশ্চয়তা থাকা দরকার।

‘তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান চালানোর ক্ষেত্রে আমরা দেশগুলোকে আহ্বান জানাব যাতে জীবিতদের প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সুরক্ষার বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়,’ বলেন এই মানবাধিকারকর্মী।

ইউএনএইচসিআর বলছে, মিয়ানমারের পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতির দিকে যাচ্ছে। এতে আরো অনেক বেশি রোহিঙ্গা দেশটি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যেতে বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারেন।

নিয়মবহির্ভূত নৌচলাচল নিয়ন্ত্রণে দেশগুলোর পারস্পরিক পরিকল্পনা ও সহযোগিতা দরকার। যা এরইমধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনৈতিক জোট আসিয়ান ও আন্তর্জাতিক ফোরাম বালি প্রসেসে নেয়া হয়েছে।

চোরাচালান, মানবপাচার, আন্তর্জাতিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সহযোগিতায় ২০০২ সালে বালি প্রসেস গঠন করা হয়। আর শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও মিথ্যা বয়ান প্রচার বন্ধ করে সমুদ্রপথের সুরক্ষায় জোর দিতে দেশগুলোকে উৎসাহিত করছে ইউএনএইচসিআর।
সূত্র : ইউএনবি

 

সর্বশেষ সংবাদ

ভারতীয় জেলেদের নির্যাতনের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ভারতীয় জেলেদের ওপর নির্যাতন সংক্রান্ত ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগের বিষয়ে গভীর হতাশা ও তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ