সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে যারা বাড়ি গিয়েছেন, তাদের অফিস খোলা না হলে ১৪ দিন পর ঢাকায় ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। রোববার (১৬ মে) দুপুরে ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম এ অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, ‘সরকার পরামর্শ দিয়েছিল আমরা যেন এবারের ঈদে নিজ নিজ অবস্থান ছেড়ে বাইরে চলে না যাই। কিন্তু আমরা দেখেছি, বড় সংখ্যক মানুষ এই পরামর্শ উপেক্ষা করেও নানাভাবে ঘরে ফেরার চেষ্টা করেছেন। সেখানে কিছু মর্মান্তিক দৃশ্য দেখেছি।’
অধিদফতরের এ মুখপাত্র বলেন, ‘যারা বাড়িতে গেছেন, এখনো অফিস খোলেনি। স্কুল-কলেজে দেরি করে ফিরলেও কোনো ক্ষতি হচ্ছে না, তারা অন্তত সাত থেকে ১৪ দিন দেরি করে ফিরে আসবেন।’
স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকায় ফেরার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যাদের ইতোমধ্যে উপসর্গ দেখা গেছে, তারা নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা জেলা সদর হাসপাতালে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা অবশ্যই করিয়ে নেবেন। ফিরে আসার সময় শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে।’
যেকোনো মুহূর্তেই বন্ধ হবে দ্বিতীয় ডোজ
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে চলমান টিকা কার্যক্রমের দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ যেকোনো মুহূর্তেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অধিদফতরের মুখপাত্র বলেন, ‘প্রথম ডোজ সরকার আপাতত বন্ধ করেছে। সরকারের হাতে যে টিকা আছে, তাতে বড়জোর এক সপ্তাহ চলবে, এর মধ্যে টিকার ব্যবস্থা না হলে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া বন্ধ থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত দেশে যত মানুষকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার মতো মজুদ স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাতে নেই। এখন ১৪ লাখ টিকার সংকট রয়েছে। এরই মধ্যে রাজধানীসহ বিভিন্ন হাসপাতালে টিকাদান বন্ধ রয়েছে। বিএসএমএমইউতে কাল থেকে বন্ধ হয়ে যাবে।’
নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালে টিকার দ্বিতীয় ডোজের মজুদ শেষ হয়ে গেলে টিকা দেওয়া বন্ধ রাখা হবে। কোনো হাসপাতালে যদি আজ টিকার মজুদ শেষ হয়ে যায়, তাহলে আপাতত সেই হাসপাতালের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া বন্ধ থাকবে। আর আগামীকাল থেকে ওই হাসপাতালে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া সম্ভব হবে না। আমাদের হাতে যা টিকা আছে এটা দিয়ে হয়তো আরও এক সপ্তাহ চলবে। টিকার মজুদ শেষ হলে এই টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ থাকবে যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা নতুন করে টিকা পাই।’
মাসের শেষ দিকে আসতে পারে ‘সুখবর’
টিকা সংগ্রহ সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করছে জানিয়ে মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘রাশিয়ার টিকা পেতে সেদেশের সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে, বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয়ে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। চীন থেকে টিকা আনার বিষয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করছি। আশা করছি, চলতি মাসের শেষের দিকে অথবা সামনের মাসের প্রথমদিকে এ বিষয়ে আপনাদের আরও বিস্তারিত বলতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘ভারতীয় ধরন ছাড়া এখনও পর্যন্ত অন্য কোনো দেশের ধরন পাওয়া যায়নি। অন্য কোনো দেশের ধরনের জিনোম সিকোয়েন্স পাওয়া গেলে আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাব। ভারত থেকে যারা আসছেন তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। যারা সেখান থেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে আসছেন, তাদের প্রত্যেকেরই জিনোম সিকোয়েন্স করা হচ্ছে।’