নিজ দেশে জনপ্রিয়তা কিছুটা কমলেও এখনো তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান আরব বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। দ্যা ফিন্যানসিয়াল টাইমস পত্রিকাটি গত সপ্তাহের আরব ব্যারোমিটারের তালিকাকে উদ্ধৃত করে মঙ্গলবার বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা হলেন এরদোগান।
এ প্রতিষ্ঠিত গবেষণা কেন্দ্রেটি ধারাবাহিকভাবে যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে প্রেসিডেন্ট এরদোগান সবার শীর্ষে অবস্থান করেছেন। আরব ব্যারোমিটারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ তালিকা তৈরিতে যে নির্বাচন হয়েছে তাতে ২০ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নিয়েছেন।
দ্যা ফিন্যানসিয়াল টাইমস পত্রিকাটি এ তুর্কি নেতার লৌহকঠিন দিকগুলোও তুলে ধরেছে। এরদোগান সব সময় উসমানীয় সম্রাজ্যের উদ্দীপনা নিয়ে বিভিন্ন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছেন… এবং তিনি ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত উত্তর সিরিয়ার চারটি অঞ্চল দখল করেছেন। এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপের পরও তিনি সব সময়ই আরব বিশ্বের জনপ্রিয় নেতাদের তালিকায় সবার শীর্ষে।
এ পত্রিকাটিতে আরো বলা হয়েছে, যদিও এ অঞ্চলের অতীত উসমানীয় সম্রাজ্যের সাথে জড়িত তবু সৌদি আরব ও ইরানের মতো ধর্মভিত্তিক দেশের তুলনায় এরদোগানের তুরস্ককে সবাই বেশি সম্মান দেয়। আরব বিশ্বের স্বৈরাচারী শাসকরা এখন শক্তিহীন হয়ে পড়েছেন। আর লোকরঞ্জনবাদী নায়কদের প্রতি জনগণের দুর্বলতা আছে। দ্যা ফিন্যানসিয়াল টাইমস পত্রিকাটি এ ক্ষেত্রে পরলোকগত মিসরীয় নেতা গামাল আব্দুর নাসেরের উদাহরণ দিয়েছে। এ নেতা তার সামরিক অভিযান ও আরব জাতীয়তাবাদের মাধ্যমে তার অনুরাগীর সংখা বাড়িয়েছিলেন। একইভাবে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের শাসনামলে তুরস্ক গত বছর সিরিয়া ও ইরাকের কুর্দি সশস্ত্র যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে, লিবিয়াতে আমিরাত সমর্থকদের বিরুদ্ধে বিরোধী পক্ষকে অস্ত্র ও সেনা দিয়ে মদদ দিয়েছে এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরে অধিকার নিয়ে গ্রিস ও সাইপ্রাসের সাথে সঙ্ঘাতে জড়িয়েছে।
পত্রিকাটি আরো বলছে, এছাড়াও এরদোগান তার সাংস্কৃতিক শক্তিকেও ব্যবহার করেছেন। তিনি বিভিন্ন ঐতিহাসিক উসমানীয় চরিত্র নিয়ে নাটক ও সিনেমা তৈরি করেছেন এবং এসব বিষয় থেকে লাভবান হয়েছেন। তিনি হাজিয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তর করেছেন। এছাড়া সুন্নী, তুর্কি জাতি ও শক্ত ইসলামি জাতীয়তাকে শক্তিশালী করেছেন। এখন এ বিষয়গুলো এরদোগানের শাসনের বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান আরব বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা।
সূত্র : আহভাল