মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে শোচনীয় হাল বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশের। একেবারেই নিম্ন আয়ের দেশের তো কথাই নেই, সেখানে মিলছে না টিকার চালান। পুরো বিশ্বের সিংহভাগ অংশ এভাবে অন্ধকারে টিকে থাকার লড়াই করলেও ধনী দেশের চিত্র ভিন্ন।
তারা বৈশ্বিক ভ্যাকসিন সরবরাহের সুবিশাল অংশ পেয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। সেই তুলনায় দরিদ্র দেশগুলো মাত্র ১ শতাংশ পেয়েছে বলে গত শুক্রবার জাতিসংঘের সংস্থাটি এক প্রেস বিফিংয়ে উল্লেখ করে।
বিশ্বব্যাপী এপর্যন্ত দেওয়া হয়েছে নানান কোম্পানির তৈরি কোভিড ভ্যাকসিনের ৭০ কোটির বেশি ডোজ। “এর ৮৭ শতাংশ উচ্চ ও মধ্য আয়ের দেশের নাগরিকরা পেয়েছে, সেই তুলনায় অতি-দরিদ্র দেশের নাগরিকদের মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশের টিকাপ্রাপ্তি ঘটেছে বলে জানান হু’ মহাপরিচালক ড. তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস।
উচ্চ আয়ের দেশে গড়ে প্রতি চারজনের মধ্যে একজন টিকা পেয়েছেন। সেই তুলনায় দরিদ্র দেশের প্রতি ৫০০ জনে একজন পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
“এই সংখ্যানুপাত বৈশ্বিক ভ্যাকসিন সরবরাহের ক্ষেত্রেও বিস্মিত করে দেওয়ার মতো অসমতা তুলে ধরছে,” গেব্রেয়াসুস বলেছেন। তিনি আরও জানান, সমতার ভিত্তিতে দরিদ্র দেশে টিকা বণ্টনের উদ্দেশ্যে গঠিত হু’র কোভ্যাক্স কর্মসূচিও পড়েছে ডোজের চালান সঙ্কটে।
“কোভ্যাক্সকে পাশ কাটিয়ে সম্পদশালী কিছু দেশ এবং কোম্পানি তাদের নিজস্ব উদ্যোগে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে ভ্যাকসিন সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে, এর মাধ্যমে তারা নিজেদের রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থ চরিতার্থ করছে শুধু। দ্বিপাক্ষিক সহায়তার এই ধারা ভ্যাকসিন বৈষম্যের দাবানলকে আরও তীব্র রূপ দেবে।”
এই অবস্থায় হু’ নিশ্চুপ বসে নেই হু, বরং কোভ্যাক্স কর্মসূচির অংশীদার ভ্যাকসিন জোট গ্যাভি ও এপিডেমেকিক প্রিপার্ডনেস ইনোভেশন্স’কে সাথে নিয়ে উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধির কৌশল তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান মহাপরিচালক।
কোভ্যাক্স জোট এখন পর্যাপ্ত মজুত থাকা দেশ থেকে অনুদান হিসেবে ভ্যাকসিন ডোজ তাদের কাছে সরবরাহের দাবি করছে। এছাড়া, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও উৎপাদন শুরুর মাধ্যমে সরবরাহ ঘাটতি ও বৈষম্য দূর করার লক্ষ্য নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে তারা। এব্যাপারে ড. তেদরোস ও গ্যাভি’র মুখ্য নির্বাহী ড. সেথ বার্কলি উভয়েই নিশ্চিত করেন।
সূত্র: সিএনবিসি