নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও রয়্যাল রিসোর্ট থেকে মুক্ত হয়েছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। সেখানে তার সঙ্গে থাকা নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এছাড়া ওই নারী তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সাবেক স্ত্রী ছিলেন বলে জানিয়েছেন মামুনুল হক
শনিবার (৩ এপ্রিল) রাত ১০টায় নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে এসব কথা বলেন তিনি।
ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, “অনেকের মধ্যে আজকের ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। অনেক বিভ্রান্তিও হচ্ছে। মূলত আসল ঘটনা জানাতেই আমি ফেসবুক লাইভে এসেছি। আমার সাথে আমার বড় ভাই ও মেজ ভাইও আছেন।”
“টানা পরিশ্রমের কারণে আমার একটু বিশ্রামের প্রয়োজন ছিল। এ কারণে আজ সেখানে গিয়েছিলাম। সাথে আমার দ্বিতীয় স্ত্রী ছিল। পুলিশ আমার থেকে যাবতীয় তথ্য নিয়ে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে। আমার দ্বিতীয় স্ত্রী আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সাবেক স্ত্রী ছিলেন। তাদের দুটি সন্তানও আছে। এরপর পারিবারিকভাবে আমি তাকে বিয়ে করি।”
তিনি আরও বলেন, “সেখানে স্থানীয় কিছু সংবাদকর্মীদের সাথে কিছু যুবলীগ ও সরকারদলীয় লোক আমার সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। তারা লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে হামলা ও আক্রমণ করেছেন। দেশের মানুষ আমার বক্তব্য সেখানেও শুনেছে ও দেখেছে। এরপর সেসব ভিডিও ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ওই রিসোর্টে এসে আমাকে উদ্ধার করে। তারা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। আমি জনতাকে শান্ত করি ও তাদের নিয়ে উক্ত স্থান ত্যাগ করি। আমি আহবান করবো এই বিষয় নিয়ে কেউ বিভ্রান্তি ছড়াবেন না। সবাই শান্ত থাকুন। জানমালের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ করবেন না। এটাই আমার অফিসিয়াল বক্তব্য।”
এর আগে রাত ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে স্ত্রীসহ অবরুদ্ধ হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে ছিনিয়ে নেয় হেফাজত কর্মীরা। এসময় রিসোর্টের মূল ফটকসহ ভেতরে ভাঙচুর চালায় কয়েকশত উত্তেজিত হেফাজত কর্মী-সমর্থক। পরে তাকে স্থানীয় একটি ঈদগাহে নিয়ে যায়। সেখানে মামুনুল হক তার কর্মীদের শান্ত থাকার নির্দেশ দেন।
এদিকে সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তবেদুর রহমান জানান, মামুনুল হককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কথিত স্ত্রীসহ তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে কিছুক্ষণ আগে। মামুনুল হক ওই নারীকে তার স্ত্রী বলে দাবি করলেও এর কোনো প্রমাণ তারা দেখাতে পারেননি। এছাড়া তাদের এখনও কাবিন হয়নি বলে মামুনুল হককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে সোনারগাঁওয়ের রয়্যাল রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষ থেকে এক নারীসহ স্থানীয়রা মামুনুলকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়।
এদিকে জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক দাবি করেছেন, তার সাথে থাকা ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। শনিবার দুপুরে অবকাশ যাপনের জন্য সোনারগাঁয়ে বেড়াতে এসে এ রিসোর্টে ওঠেন।
সেসময় তিনি বলেন, “আমি দুই বছর আগে শরিয়ত মোতাবেক তাকে (ওই নারী) বিয়ে করেছি। আজ দুপুরে সোনারগাঁয়ে স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে আসি। আমি কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে আসিনি। যারা আমাকে হেয় করার চেষ্টা করছে আমি অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেব।”