পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, সুন্দরবন সংরক্ষণে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে সুন্দরবনসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এর জন্য কৌশলগত পরিবেশ সমীক্ষার কাজ করা হচ্ছে। প্রস্তুতাধীন কৌশলগত পরিবেশ সমীক্ষা প্রতিবেদন এবং কৌশলগত পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা সুন্দরবন সংরক্ষণে সুস্পষ্ট গাইড লাইন প্রদান করবে। সে অনুযায়ী দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আমরা সুন্দরবন সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে পারবো। মন্ত্রী বলেন, সুন্দরবন সংরক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করার জন্য সরকার সম্প্রতি “ সুন্দরবন সুরক্ষা” নামক একটি প্রকল্পও একনেকে অনুমোদন করেছে।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও সুন্দরবনের কৌশলগত পরিবেশ সমীক্ষা (SEA) বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ের অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো: শাহাব উদ্দিন এসব কথা বলেন।
পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রচুর উন্নয়ন কাজের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হবার পর ঐ অঞ্চলে উন্নয়ন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন আরও তরান্বিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত নীতি, পরিকল্পনা ও কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে যাতে সুন্দরবনের ক্ষতি না হয় বরং এর সংরক্ষণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে একটি কারিগরি প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও সুন্দরবনের কৌশলগত পরিবেশ সমীক্ষাটি সম্পন্ন করা হচ্ছে। সমীক্ষার প্রতিবেদন অনুযায়ী উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সমুহ সচেতনতা ও আন্তঃ সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করে সুন্দরবনসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রম নিশ্চিত করা হবে।
পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, সুন্দরবন শুধু আমাদের সম্পদ নয় এটি বিশ্বের সম্পদও বটে। সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাস হতে সুন্দরবন আমাদেরকে যেভাবে রক্ষা করে তার কোন সঠিক অর্থনৈতিক মূল্যায়ন প্রায় অসম্ভব। তা ছাড়া সুন্দরবনের একটি অংশ ইউনেস্কো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এবং সমগ্র সুন্দরবন একটি রামসার সাইট। তাই সুন্দরবন সংরক্ষণ আমাদের সকলের দায়িত্ব। একটি আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান যৌথ ভাবে সমীক্ষাটি সম্পন্ন করছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দাখিল কৃত প্রাথমিক প্রতিবেদন সমুহ ইতোমধ্যে রিভিউ কমিটি কর্তৃক রিভিউ শেষে চূড়ান্ত করা হয়েছে। আশা করছি আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই সমীক্ষার চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেয়ে যাবো।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায় পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) আহমদ শামীম আল রাজী, প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসাইন চৌধুরী এবং সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস এর নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা এ খান প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় প্রধান উপস্থাপনা করেন চেক রিপাবলিকের ইন্টেগ্রা কনসাল্টিং এর টিম লিডার অধ্যাপক ব্যারি দালাল ক্লেটন। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ কৌশলপত্র বিষয়ে মতামত প্রদান করেন।