ভাঙাড়ির দোকান থেকে কেনা বোতলে বিষাক্ত রাসায়নিক ভরে বিক্রি করা হচ্ছে ‘মদ’ বলে। এ বিষ কিনে যারা বাসায় রেখেছেন তাদের সতর্ক করেছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা: শফিকুল ইসলাম। বিষাক্ত এ পানীয় পান না করতে সাংবাদিকদের মাধ্যমে নগরবাসীকে অনুরোধ করেন তিনি। সম্প্রতি মদপান করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন অর্ধশতাধিক ব্যক্তি।
রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকা। নানারকম কেমিক্যালের পাওয়া যায় তাই সারা দেশেই নাম আছে মিটফোর্ডের। কারখানাসহ নানা প্রয়োজনে এসব কেমিক্যাল কেনেন ব্যবসায়ীরা।
সূত্র মতে, করোনার কারণে সারাবিশ্বেই উৎপাদন ও সরবরাহের সংকটে রয়েছে বিদেশি মদ। আর এ কারণেই দেশের বাজারেও বৈধ মদের দোকানে ঘাটতি আছে বিদেশি মদের। সেই সুযোগটাই নিয়েছে অপরাধী চক্র।
মিটফোর্ড এলাকা থেকে কেমিক্যাল কিনে ভাঙাড়ির দোকান থেকে বিদেশি মদের বোতল সংগ্রহ করে তৈরি হচ্ছে মদ নামের বিষ। সোমবার রাতে ভাটারায় এমনই একটি কারখানায় অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। কিন্তু প্রশ্ন হল- মোহাম্মদপুরে দু’জন, বারিধারায় দু’জন আর ভাটাড়ায় ৩ জন মিলে শুধু রাজধানীতেই যে ৭ জন মারা গেছেন তারা সবাইকি একই কারখানার ক্রেতা?
পুলিশ বলছে, অপরাধী চক্র শুধু একটি নয় তাই মৃত ব্যক্তিরা সবাই এক জায়গার ক্রেতা কিনা তা আরো অনুসন্ধান শেষে বলা সম্ভব।
ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, গতকালের অভিযানে দেখা যায় এ কারখানা থেকে এক সপ্তাহে ২৩১ বোতল ভেজাল মদ বিক্রি করেছে। ক্রেতারা হোম সার্ভিসের মাধ্যমে কিনত। কোনো দোকান থেকে তারা কিনত না। ফোনে তারা অর্ডার করত আর বাড়ি পৌঁছে দিত তারা। এ সিস্টেমে ছিল বেচাকেনা। আরো ২৩১টি বোতল কোথায় গেল এক সপ্তাহে এখন পর্যন্ত আমাদের তদন্ত চলছে।
ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, এইসব ভেজাল কারিগর সাধারণত পত্রিকা মুড়িয়ে বিদেশি মদের নামে বিষ বিক্রি করছে। বিদেশি মদ কাগজের প্যাকেটে বিক্রি হয় হোম ডেলিভারি হয় যেগুলো সেগুলোই ভেজাল মদ। তাই ইতোমধ্যেই যারা এভাবে মদ কিনেছেন তারা তা পান করলে বিপদে পড়বেন।
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ভেজাল মদ ও অনুমোদনহীন মদের কারখানা, দোকান বা বারে অভিযান চলছে, তা আরও জোরদার করা হবে।
তিনি বলেন, যাদের বৈধতা নেই মদ কেনার তারাই কিন্তু অনিরাপদ জায়গা থেকে তারা এটি কিনছে। অনিরাপদ জায়গাতে কেনার কারণে মৃত্যু ঝুঁকিটা কিন্তু সব সময় থেকেই যাচ্ছে। কেউ যদি অনিরাপদ জায়গা থেকে মদ কিনে থাকেন তাহলে দয়া করে সেটি ফেলে দিন।