নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরাটা দারুণ হলো সাকিব আল হাসানের। টানা তিন ম্যাচে বল-ব্যাটের ঝলকানিতে সিরিজ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন তারকা এই অলরাউন্ডার। ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান মুশফিকুর রহীম।
সোমবার চট্টগ্রামে তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে ১২০ রানের বড় ব্যবধানে। যেখানে ব্যাট হাতে ৫১ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন তিনি। তবে ইনজুরির কারণে গোটা ১০ ওভার বোলিং করতে পারেননি সাকিব। ৪.৫ ওভার বোলিং করেই মাঠ ছাড়েন তিনি।
তার পরও সিরিজ সেরার খেতাব জিততে কষ্ট হয়নি তার। তিন ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৭ উইকেট মেহেদী হাসান মিরাজের। সাকিব নিয়েছেন তিন ম্যাচে ৬ উইকেট। সেরা বোলিং ৮ রানে ৪ উইকেট, প্রথম ম্যাচে। ৬ উইকেট পাওয়া আরেক বোলার মোস্তাফিজুর রহমান।
ব্যাট হাতে সিরিজের সর্বোচ্চ রান তামিম ইকবালের, ১৫৮। ১১৬ রান ওয়েস্ট ইন্ডিজের রভম্যান পাওয়েলের। এরপরই অবস্থান সাকিবের। ৫৬.৫০ গড়ে তার রান ১১৩।
সিরিজ সেরার পুরস্কার হাতে পাওয়ার পর সাকিব বলেন, ‘সব কৃতিত্ব আসলে কোচিং স্টাফ ও টিমমেটদের। দীর্ঘ দিন পর ফেরাটা সহজ ছিল না। তবে প্রথম ম্যাচের পর আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। সিরিজ জয়ের পর আত্মবিশ্বাস আরো বেড়েছে।’
নিজের চোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখনো বুঝতে পারছি না চোটের মাত্রাটা কতটা প্রখর, কাল সকালে বোঝা যাবে।’
প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার পর নিজের ফেসবুক পেজে সাকিব লেখেন, ‘সবকটি ম্যাচে দারুণ পারফরমেন্সে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বাংলাওয়াশ করে সিরিজের দারুণ সমাপ্তি আনল টাইগাররা। ব্যাটে বলে আবার ফিরে এসে অত্যন্ত আনন্দিত।’
এক বছরের নিষেধাজ্ঞায় মিস করেছেন সাকিব ৪ টেস্ট,৩ ওয়ানডে,৭ টি-২০।তবে বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার ৪৮৭ দিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেই ছড়িয়েছেন দ্যুতি। ফিরেই প্রত্যাবর্তন ম্যাচে মিতব্যয়ী বোলিংয়ে (৭.২-২-৮-৪) ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরষ্কার পেয়েছেন।
দ্বিতীয় ম্যাচে করেছেন অল রাউন্ড পারফর্ম (২/৩০ও ৪৪*)। সিরিজের শেষ ম্যাচে সেখানে হাফ সেঞ্চুরি (৫১)। ৫ম ওভারে বোলিংয়ের সময়ে কুঁচকিতে টান পড়ায় ফিরে গেছেন ড্রেসিং রুমে। ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ৬ উইকেট (গড় ৮.৩৩)-এর পাশে ১১৩ রান ( গড় ৫৬.৫০) !
এমন অল রাউন্ড পারফরমেন্সের পুরষ্কার হিসেবে নিজের প্রত্যাবর্তন আন্তর্জাতিক সিরিজে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরষ্কারে ভুষিত হয়েছেন সাকিব। এমন কৃতিত্বে দারুন একটি রেকর্ডও হয়ে গেছে সাকিবের। শ্রীলংকা লিজেন্ডারি সনাথ জয়সুরিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরষ্কার জিতে (১৩ বার) সিরিজটা শুরু করেছিলেন সাকিব।
ক্যারিয়ারের ১২৪ তম সিরিজের পুরষ্কার জিতে জয়সুরিয়াকে (১৭৬ সিরিজে ১৩ বার ম্যান অব দ্য সিরিজ) টপকে ১৪তম বার সিরিজ সেরার পুরষ্কার পেলেন সাকিব। ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরষ্কারে বিশ্বসেরা এই অল রাউন্ডারের সামনে এখন শুধু ২ লিজেন্ডারি।
তিন ফরমেটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মিলে ১৪৮টি সিরিজের মধ্যে ১৫টির সিরিজ সেরার পুরষ্কার জিতেছেন দক্ষিন আফ্রিকার শন পোলক। আর একটি সিরিজ সেরার পুরষ্কার জিতলে সাকিব ছুঁয়ে ফেলবেন পোলককে। ব্যাটিং জিনিয়াস শচীন টেন্ডুলকারকে ছুঁয়ে ফেলতে (১৮৩ সিরিজে ২০বার ম্যান অব দ্য সিরিজ) দরকার আর ৬টি সিরিজ সেরার পুরষ্কার সাকিবের।