আদরের সন্তানকে মানুষ করতে কতই না কষ্ট করছেন আপনি। দিন-রাত খাটছেন শুধু সন্তানটির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায়; সুশিক্ষিত তথা মানুষের মত মানুষ করার আশায়। কিন্তু সে কি তাই শিখছে যেমনটা আপনি চাইছেন? এটা কিন্তু নিশ্চিত যে সে যা শিখছে তার অধিকাংশই আপনাকে অনুসরণ করে শিখছে সে। বিষয়টা হয়তো আপনি খেয়ালও করেননি। এমন অনেক কর্মকান্ড হয়তো সম্পন্ন করেছেন তার সামনে যা তার জন্য কুশিক্ষার কারণ। এভাবেই সন্তানকে সঠিক শিক্ষায় দীক্ষিত করার স্বপ্নটি আপনি মেরে ফেলছেন নিজ হাতেই!
আজকাল বিবিধ অপরাধ, দুর্নীতি, মাদক সমস্যা, পারিবারিক কলহ, ধর্মান্ধতা, অপসংস্কৃতির প্রভাবসহ কতিপয় সমস্যা যেন সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। এর মাঝে বসবাস করে আপনার সন্তান আসলে কি শিখছে? এমন নয়তো যে এ ধরনের সমস্যাগুলো স্বয়ং আপনার মধ্যেই প্রকট ভাবে রয়েছে; যা পরবর্তিতে আপনার সন্তানের ওপর সঞ্চালিত হচ্ছে।
সবার প্রথম সন্তানকে শেখানো উচিৎ নৈতিক দায়িত্ব, পরম সহিষ্ণুতা, অসাম্প্রদায়িকতা-অহিংসা এবং শালীনতা। একদিনেই এত সব শিক্ষা তার হয়ে যাবে না তাই সময় নিন। প্রয়োজনে প্র্যাকটিক্যালি শেখান। ভুলেও তার সামনে পারিবারিক সমস্যার বিষয়গুলো তুলে ধরবেন না। আর কিছু না হলেও এতে করে আপনার সন্তানটি কিন্তু সামাজিক হয়ে বেড়ে উঠবে।
পাশাপাশি তাকে শেখান মিতব্যায়িতা যাতে করে তার ভেতর আর্থিক লালসা তৈরী না হতে পারে। ফলে ভবিষ্যতে সে আর যাই করুক দুর্নীতি বা অবৈধ লেনদেনে সম্পৃক্ত হবে না। আর যদি আপনি নিজেই হোন দুর্নীতিগ্রস্ত তবে আজই নিজেকে বদলে ফেলুন। কে জানে যে আপনার সন্তান বিষয়টি ইতোমধ্যেই জেনে গেছে এবং শুধু তাই না বিষয়টি তার জন্য রীতিমত আদর্শিক হয়ে দাঁড়িয়েছে!
তার মনে অসাম্প্রদায়িকতার বীজ বপনের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে তার ছেলেবেলা। তাই তখন থেকেই বিষয়টি তাকে বোঝাতে শুরু করেন। সর্বপরি আপনার সন্তানকে সৃজনশীল করে গড়ে তোলা আপনারই দায়িত্ব। নতুবা আপনারই ভুলের কারণে ভাইষ্যতে আপনার সন্তান হয়ে উঠবে ধ্বংসাত্বক।
মাদকাসক্ত যখন আপনি নিজেই তখন আপনার সন্তান কিন্তু ওই একই পথে হাটবে। হয়তো আপনাকে ছাড়িয়ে যাবে আরও বহুদূর। মাদক গ্রহনের ব্যাপারটি যেন তার কাছে প্যাশন না হয়ে যায়, তাই এখনই সাবধান হোন।
নারীর প্রতি আপনার মনোভাব কেমন সেটা কিন্তু আপনার সন্তান খেয়াল করে। আপনি যদি নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হোন আপনার সন্তানও নিঃসন্দেহে তেমন চরিত্রের অধিকারী হবে। অথচ আপনারই যদি একজন নারী সন্তান থেকে থাকে তাবে তার সাথে এমনটা হোক -তা আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না। তাই নিজের চরিত্র ধরে রাখুন, অন্তত আপনার সন্তানের সুশিক্ষার স্বার্থে। সার্বিকভাবে শালীনতা আর সুসংস্কারে যেন বেড়ে ওঠে আপনার আদেরর সন্তানটি।