মহান আল্লাহর একমাত্র মনোনীত ধর্ম ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনবিধান। ইসলামের প্রধান ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআনে কারিম। এর মাধ্যমে আল্লাহ সেসব লোককে শান্তির পথে পরিচালিত করেন, যারা তার সন্তুষ্টির পথে চলে। কিন্তু পৃথিবীর এমনও দেশ ও অঞ্চল আছে, দারিদ্রতার কারণে সেখানের অসংখ্য মানুষ ইচ্ছা থাকার পরও পবিত্র কোরআন পড়তে পারে না। এজন্য তাদের প্রত্যেকের হাতে অন্তত একটি কোরআনের প্রতিলিপি পৌঁছে দেয়ার বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তুরস্ক।
‘তোমার হাতে আমার উপহার পবিত্র কোরআন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২০১৫ সাল থেকে দেশটির ধর্ম মন্ত্রণালয় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। তাদের বিশ্বাস- হয়তো তাদের এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার মাধ্যমে পৃথিবী নৈতিক উন্নতির দিকে অগ্রসর হবে। সেই লক্ষ্যে ২০২০ সালের শেষ পর্যন্ত বিশ্বের অন্তত ৮০টি দেশে প্রায় এক কোটি মুসলমানদের হাতে কোরআনের প্রতিলিপি পৌঁছে দিয়েছে তারা। বিতরণকৃত প্রতিলিপির সংখ্যা সর্বমোট ৯০ লাখ ৭৭ হাজার ১০১ কপি। আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এসব প্রতিলিপি বিতরণ করা হয়।
তুর্কি মানব কল্যাণ সংস্থা ‘খাইরিয়্যাত’ জানিয়েছে, জেবুতি সহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের মানুষ কোরআন পড়তে কাঠের তক্তা বা সিলেট ব্যবহার করে, তাদের এই কষ্ট অনুভব করেই তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের বিশেষ উদ্যেগে পবিত্র কোরআনের কপি উপহার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এছাড়া তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আর্জেন্টিনার স্প্যানিশ ভাষী মুসলমানদেরকে ইসলামী শিক্ষা ও আদর্শের সঙ্গে পরিচিত করতে স্পেনিশ ভাষায় তাফসীরসহ কোরআনে কারীম এবং তুর্কী ভাষা থেকে স্প্যানিশে অনূদিত দ্বীনী গ্রন্থাবলি উপহার দিয়েছে।
বুয়নুস আইরেসের আলআহমদ মসজিদে গত শুক্রবার জুমার নামাযের সময় আর্জেন্টিনার ইসলামিক সেন্টারের সহযোগিতায় তুরস্কের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পাঠানো কুরআনের স্প্যানিশ তাফসীরের কপি ও ইসলামিক বইয়ের সাত হাজার কপি বিতরণ শুরু করা হয়।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া তুরস্কের রাষ্ট্রদূত শফিক ওরাল ইসলামকে বুঝার গুরুত্ব এবং ইসলামি জ্ঞানের মহত্বের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, সভ্যতা ও সংস্কৃতির উত্থান কিতাব ও মনের অভিন্নতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই সম্ভব হতে পারে।
ধর্মীয় ও বৈদেশিক সম্পর্ক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এরদাল আতালাই অনলাইনে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেন, “আমরা বিশ্বের আনাচে-কানাচে বসবাসরত মুসলমানদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করি”।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ সক্রিয় রয়েছে। বিশেষত আর্জেন্টিনায় বসবাসরত মুসলিম ভাইয়েরা যদি তারা চান তাদের সন্তানরা তুরস্কে ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করবে, তবে আমরা এই বিষয়ে যে কোনও প্রকার সহায়তা দিতে প্রস্তুত। সূত্র: তুর্কি প্রেস