উত্থান-পতনে ভরা এক রোমাঞ্চকর ম্যাচে আবারও ছন্দ হারাল বার্সেলোনা। দারুণ গতিময় ফুটবলে নিজেদের মাঠে পাঁচবারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়নদের কাঁপিয়ে দিয়েছিল বেলজিয়ান ক্লাব ব্রুজ। বারবার এগিয়ে যাওয়ার পরও শেষ পর্যন্ত লামিনে ইয়ামালের অসাধারণ নৈপুণ্যে হার এড়াতে সক্ষম হয় হান্সি ফ্লিকের দল।
চ্যাম্পিয়নস লিগের বুধবার (৫ নভেম্বর) রাতের এই লড়াই শেষ হয় ৩-৩ সমতায়।
ম্যাচের শুরুতেই ব্রুজ এগিয়ে যায়। তবে ফেররান তোরেসের গোলে দ্রুতই সমতা ফেরায় বার্সেলোনা। ১৭তম মিনিটে আবারও গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা, যা থেকে মুক্তি মেলে দ্বিতীয়ার্ধে ইয়ামালের দারুণ কারিকুরিতে। দুই মিনিট পর আবার গোল হজম করলেও প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী গোলে শেষ পর্যন্ত ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা।
পুরো ম্যাচে বার্সেলোনার এক শট পোস্টে ও দুটি ক্রসবারে লাগে। রেফারি ভিএআর পর্যালোচনায় ব্রুজের একটি গোল ও একটি পেনাল্টি বাতিল করেন।
বল দখলে ৭৮ শতাংশ সময় ছিল বার্সেলোনার নিয়ন্ত্রণে। তারা মোট ২৩টি শট নেয়, যার মধ্যে ৬টি ছিল লক্ষ্যে। অপরদিকে ব্রুজের ১০ শটের মধ্যে ৬টি ছিল টার্গেটে।
ষষ্ঠ মিনিটেই এগিয়ে যায় ব্রুজ—কার্লোস ফোর্বসের ক্রসে নিকোলো ট্রেসোল্ডি নিখুঁত শটে জাল খুঁজে নেন। বার্সেলোনা গোলরক্ষক ভয়চেখ স্ট্যান্সনি চেষ্টা করেও তা ঠেকাতে পারেননি।
এক মিনিট পর ফেরমিন লোপেসের ক্রসে বল জালে পাঠিয়ে সমতা ফেরান ফেররান তোরেস।
১১তম মিনিটে লোপেসের বাঁকানো শট পোস্ট ছুঁয়ে বাইরে যায়। এরপর ১৭তম মিনিটে আবারও প্রতি আক্রমণ থেকে ফোর্বসের শটে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ব্রুজ।
২৭তম মিনিটে ইয়ামালের পাস থেকে ফরাসি ডিফেন্ডার জুল কুন্দের শক্তিশালী শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে।
ব্রুজের ডি-বক্সে ভিড় জমে থাকায় শট নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছিলেন না বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা। এক পর্যায়ে মার্কাস র্যাশফোর্ড কাছের পোস্ট লক্ষ্য করে নিচু শট নিলে ব্রুজ গোলরক্ষক নুরদিন ইয়ার্কাস ঝাঁপিয়ে তা রুখে দেন।
প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে ইয়ামালের নিখুঁত থ্রু বল থেকে দুর্দান্ত সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন তোরেস।
দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতেই লোপেস ও ইয়ামালের দুটি শট কোনোমতে ঠেকান ব্রুজের গোলরক্ষক।
৫৯তম মিনিটে এরিক গার্সিয়ার শট ক্রসবারে লাগে। পরের মিনিটে ইয়ামাল দুর্দান্ত গোল করে ২-২ সমতা ফেরান। ডি-বক্সের বাইরে থেকে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দানি ওলমোর সঙ্গে বল আদান-প্রদান করে ঠাণ্ডা মাথায় জাল খুঁজে নেন এই তরুণ ফরোয়ার্ড।
৬২তম মিনিটে কাছ থেকে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন ফোর্বস, তবে এক মিনিট পরই আবার গোল করে দলকে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে নেন তিনি। হান্স ফানাকেনের চমৎকার থ্রু পাস পেয়ে বাম দিকের পোস্ট ঘেঁষে শট পাঠান পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড।
৬৯তম মিনিটে ইয়ামালের বাঁকানো শট কর্নারে পাঠিয়ে রক্ষা করেন ব্রুজ গোলরক্ষক। মিনিট দুয়েক পর রেফারি ব্রুজকে পেনাল্টি দিলেও ভিএআর দেখে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।
৭৭তম মিনিটে সৌভাগ্যের জোরে সমতা ফেরায় বার্সেলোনা। ইয়ামালের ক্রসে খ্রিস্তোস জোলিসের মাথায় লেগে দিক পরিবর্তন করে বল জালে ঢুকে যায়।
অতিরিক্ত সময়ে স্ট্যান্সনির কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে গোল করলেও ভিএআর পর্যালোচনায় ফাউল ধরা পড়ে ব্রুজের রোমিও ভেরমন্টের বিরুদ্ধে।
শেষ দিকে বল দখলে রেখে ম্যাচের বাকি সময় পার করে দেয় বার্সেলোনা। ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছাড়ে দুই দল।
চার ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ১১তম স্থানে রয়েছে বার্সেলোনা। সমান ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ২৪তম স্থানে ব্রুজ।
এ দিকে টানা চার জয়ে যথাক্রমে শীর্ষ তিনে রয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ, আর্সেনাল ও ইন্টার মিলান।

