শরীরের নানা কাজ ঠিকমতো চলার জন্য হরমোন খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু শুধু শারীরিক স্বাস্থ্য নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও হরমোনের বড় প্রভাব থাকে। যখন হরমোনের মাত্রা ঠিক থাকে, তখন মন ভালো থাকে এবং আমরা মানসিকভাবে স্থিতিশীল থাকতে পারি। কিন্তু হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে তা উদ্বেগ, দুঃখ, মেজাজ খারাপ এবং অন্য অনেক মানসিক সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই মনের শান্তি বজায় রাখতে হরমোনের সঠিক মাত্রা বজায় রাখা খুব জরুরি।
কর্টিসল বা স্ট্রেস হরমোন
কর্টিসলের মাত্রা কমে গেলে রক্তের শর্করা ও ইনসুলিনের ভারসাম্য নষ্ট হয়, ফলে সুখের অনুভূতির জন্য জরুরি সেরোটোনিন কমে যায়। একইভাবে ইস্ট্রোজেনের প্রভাবেও মানসিক স্থিরতা কমে যেতে পারে।
থাইরয়েড ও অন্যান্য হরমোনজনিত রোগ
থাইরয়েড হরমোন শক্তি ও বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে। এর অস্বাভাবিকতা উদ্বেগ, অস্থিরতা ও মেজাজ পরিবর্তনের কারণ হতে পারে। পিসিওএস, পিসিওডি, মেনোপজ বা দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপও একই প্রভাব ফেলে।
ঘুমের সমস্যা
হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে মেলাটোনিনসহ ঘুম নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন ঠিকভাবে কাজ করে না। ঘুমের ঘাটতি বিষণ্নতা ও রাগ বাড়ায়।
সন্তান জন্মের পর পরিবর্তন
প্রসবের পর মায়ের ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোন হঠাৎ কমে যায়। এতে অনেক মায়ের মধ্যে প্রসব-পরবর্তী বিষণ্নতা দেখা দেয়।
খাদ্যাভ্যাসের গুরুত্ব
হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে খাদ্যতালিকায় রঙিন ফল, শাকসবজি, অ্যাভোকাডো তেল, বাদাম, ডিমের কুসুম এবং প্রো-বায়োটিক খাবার (দই, বাটারমিল্ক, ভাতের ফ্যান) রাখুন। চিনি কমিয়ে তুলসি ও ভেষজ চা পান করলে স্ট্রেস কমে।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন
যদি দীর্ঘদিন ধরে মেজাজ পরিবর্তন, ক্লান্তি, মনোযোগের ঘাটতি, ওজনের অস্বাভাবিক পরিবর্তনসহ মানসিক অস্থিরতা দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
হরমোন সরাসরি মেজাজ, ঘুম, শক্তি ও আচরণকে প্রভাবিত করে। তাই শারীরিক বা মানসিক যেকোনো পরিবর্তন অবহেলা না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।