দিনের নানা ব্যস্ততায় বা আশপাশে টয়লেট না থাকায় অনেক সময় প্রস্রাব আটকে রাখতে হয়। যদিও এটি সাময়িকভাবে সমস্যা মনে না হলেও নিয়মিত এমনটি হলে শরীরে নানা জটিলতা তৈরি হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব আটকে রাখার অভ্যাস মূত্রাশয় ও কিডনির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
ইউরোলজিস্ট ও অ্যান্ড্রোলজিস্টদের মতে, ৫ থেকে ১০ মিনিট প্রস্রাব আটকে রাখলে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু এর বেশি সময় ধরে প্রস্রাব আটকে রাখা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
দীর্ঘসময় ধরে মূত্র আটকে রাখলে মূত্রাশয়ের পেশিগুলো দুর্বল হয়ে যেতে পারে। তখন মূত্রাশয় পুরোপুরি খালি হয় না, যা সংক্রমণ ও অন্যান্য জটিলতার ঝুঁকি বাড়ায়।
দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখার সম্ভাব্য ক্ষতি
* মূত্রাশয়ের প্রসারণ:
দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখলে মূত্রাশয় অস্বাভাবিকভাবে প্রসারিত হয়ে যেতে পারে। এতে ভবিষ্যতে প্রস্রাব করতে সমস্যা হতে পারে।
প্রস্রাব আটকে রাখার কারণে তলপেটে ব্যথা, চাপ বা ক্র্যাম্পের অনুভূতি হতে পারে।
*মূত্রনালির সংক্রমণ:
ঘন ঘন প্রস্রাবের তাগিদ, প্রস্রাবের সময় জ্বালা, দুর্গন্ধ বা রক্ত দেখা গেলে তা সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে।
*কিডনিতে পাথর:
যখন প্রস্রাব ঠিকমতো বের না হয়, তখন প্রস্রাবে থাকা খনিজ পদার্থ জমে কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে।
মূত্রাশয় সুস্থ রাখতে কী করবেন
* প্রস্রাবের তাগিদ পেলে দ্রুত সাড়া দিন, অকারণে দেরি করবেন না।
* দিনে কমপক্ষে ৬–৮ গ্লাস পানি পান করুন। পানি কম খেলে প্রস্রাব ঘন হয় এবং আটকে রাখার ঝুঁকি বাড়ে।
* প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষের দিনে ৬–৭ বার প্রস্রাব করা স্বাভাবিক।
* ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখুন, কারণ এসব রোগও মূত্রাশয়ের ক্ষতি করতে পারে।
অতিরিক্ত সতর্কতা
* একজন প্রাপ্তবয়স্কের মূত্রাশয়ে সাধারণত ৩০০–৫০০ মিলিলিটার তরল ধারণ করার ক্ষমতা থাকে, যা পূরণ হতে সাধারণত ৮–৯ ঘণ্টা সময় লাগে।
* এককালীন ১৫–২০ মিনিট প্রস্রাব আটকে রাখা সমস্যা না হলেও, প্রতিদিন নিয়মিত দীর্ঘ সময় ধরে আটকে রাখলে তা ভবিষ্যতে মারাত্মক জটিলতায় রূপ নিতে পারে।
অপ্রয়োজনে প্রস্রাব আটকে রাখা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। সময়মতো টয়লেট ব্যবহার, পর্যাপ্ত পানি পান ও শারীরিক সতর্কতা মেনে চললে মূত্রাশয় ও কিডনি দীর্ঘদিন ভালো থাকবে।
সূত্র: বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট