ইউক্রেন ও রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ থামাতে ইস্তাম্বুলে দ্বিতীয় দফা শান্তি আলোচনার প্রস্তুতি চলছে, তবে ইউক্রেন এখনো আলোচনায় অংশগ্রহণের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে মস্কো। আসন্ন বৈঠক নির্ধারিত ২ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, তা নিয়ে এখনও রয়েছে অনিশ্চয়তা।
রাশিয়া জানায়, তারা ইস্তাম্বুল আলোচনায় একটি দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রস্তাবের স্মারকলিপি উপস্থাপন করতে চায়। তবে কিয়েভ বলছে, আলোচনায় বসার আগে রাশিয়াকে অবশ্যই তাদের প্রস্তাব কাগজে দিতে হবে। অন্যথায় তারা আলোচনায় অংশ নেবে না। ক্রেমলিন ইউক্রেনের এই দাবি ‘অগঠনমূলক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
রাশিয়ার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সাড়া মেলেনি। আমরা ইউক্রেনীয় প্রতিপক্ষের সম্মতির অপেক্ষায় আছি।” এদিকে ইউক্রেন দাবি করেছে, তারা আগে থেকেই রাশিয়ার কাছে শান্তি চুক্তির প্রস্তাব জমা দিয়েছে এবং মস্কোকেও একইভাবে চুক্তির খসড়া দিতে বলেছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান দুই পক্ষকে সংলাপের দরজা খোলা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। গত ১৬ মে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হলেও উভয় দেশ ১ হাজার করে যুদ্ধবন্দি বিনিময়ে সম্মত হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া ও সামরিক পরিস্থিতি:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শান্তিপূর্ণ সমাধানে জোর দিয়ে আসছেন। তিনি বলেন, পুতিন দুই সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ নেবেন কি না, তা তিনি নজরে রাখছেন। রাশিয়ার ক্রমাগত হামলা নিয়ে তিনি হতাশা প্রকাশ করলেও নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে নন।
ইউক্রেনের অভিযোগ, রাশিয়া শান্তি আলোচনার আগে নিজেদের প্রস্তাব দিতে ভয় পাচ্ছে, কারণ সেটি “সম্ভবত অবাস্তব আলটিমেটামে পূর্ণ।”
এদিকে যুদ্ধক্ষেত্রে হামলা অব্যাহত রয়েছে। ইউক্রেনের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, রাশিয়ার সাম্প্রতিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছে। খারকিভ ও দোনেৎস্ক অঞ্চলে কয়েকটি গ্রাম দখল করেছে রুশ সেনারা এবং ৪৮টি ইউক্রেনীয় ড্রোন প্রতিহত করেছে বলে দাবি করেছে মস্কো।
অন্যদিকে, দক্ষিণ রাশিয়ায় এক বিস্ফোরণে অবসরপ্রাপ্ত রুশ কমান্ডারের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রুশ কর্তৃপক্ষ বলছে, এতে ইউক্রেনের হাত থাকার সম্ভাবনা তারা উড়িয়ে দিচ্ছে না।