ভারতের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন নামের পাশে মাঠ কিংবা মাঠের বাইরে বিতর্ক যেনো লেগেই থাকে। এবার হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট সংস্থাকে হায়দ্রাবাদ স্টেডিয়াম থেকে আজহারের নাম মুছে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক স্বার্থ সংঘাতের অভিযোগ উঠেছে আজহারের বিরুদ্ধে।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা ‘প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আজহারউদ্দিন বলেন, হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (এইচসিএ) এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে যাবেন। কারণ, আদালতের ওপর তার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, অতীতেও তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিরুদ্ধে তিনি আদালতে গিয়েছিলেন, যেখানে তিনি ন্যায়বিচার পেয়েছিলেন।
আজহারউদ্দিন আরও বলেন, তিনি ভারতের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। ভারতীয় জনগণ ও তার ভক্তদের ওপর তার পূর্ণ আস্থা রয়েছে যে, তারা হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে যোগ্য জবাব দেবে। আমার ভক্তরা আদালতে আমার বিরুদ্ধে চলতে থাকা ষড়যন্ত্রের জবাব দিবে।
হায়দ্রাবাদ লর্ডস ক্রিকেট ক্লাব (এলসিসি) হায়দ্রাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের নর্থ স্ট্যান্ড থেকে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি আজহারউদ্দিনের নাম সরানোর দাবি জানিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করে।
হায়দ্রাবাদ লর্ডস ক্রিকেট ক্লাব তাদের অভিযোগে জানায়, এখানে একটি কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট (স্বার্থের সংঘাত) ছিলো। কারণ, আজহারউদ্দিন নিজেই যখন হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন, তখনই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অভিযোগ শুনে ন্যায়পাল বিচারপতি ভি. ঐশ্বরিয়া হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে নর্থ প্যাভিলিয়ন স্ট্যান্ড থেকে আজহারউদ্দিনের নাম সরানোর নির্দেশ দেন। এছাড়াও, হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে আজহারউদ্দিনের নাম লেখা আর কোনো টিকিট ইস্যু না করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ২৫ পৃষ্ঠার সিদ্ধান্তে ন্যায়পাল লিখেছেন, অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ পরিষদের দ্বারা এই সিদ্ধান্তের কোনো অনুমোদন না থাকায় আজহারউদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলাটি আরও শক্তিশালী হয়েছে, কারণ তিনি নিজের স্বার্থে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।
এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর, প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন বলেন, বর্তমান প্রশাসন তাকে লক্ষ্যবস্তু করছে, কারণ তিনি তার মেয়াদে দুর্নীতি করতে দেননি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আজহারউদ্দিন হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। ২০১৯ সালে একটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নর্থ প্যাভিলিয়ন স্ট্যান্ডের নাম ‘ভিভিএস লাক্সমান-এর পরিবর্তে ভারতের সাবেক এই অধিনায়কের নামে রাখা হবে। পরবর্তীতে এই সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয় এবং স্ট্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে ‘মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন’ রাখা হয়।