সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মুমিনের জীবনে নেমে আসা দুঃখ-কষ্ট ও বিপদাপদ আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষাস্বরূপ। আল্লাহ মুমিনদের নানা ধরনের বিপদের সম্মুখীন করে পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন বিপদাপদ ও পরীক্ষার মধ্যেও মুমিনের জন্য রয়েছে অসংখ্য কল্যাণ ও সতর্ক বার্তা।
গুনাহ মাফ হয়: বিপদাপদ ও দুঃখ-কষ্টের কারণে গুনাহ মাফ হয়। এ ব্যাপারে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আয়েশা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের ওপর যেকোনো বিপদাপদ আসুক না কেন, এমনকি একটা কাঁটাও যদি তার পায়ে বিঁধে, এর জন্য তার পাপ মোচন হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫৩১৭)
অপর হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবু সাইদ খুদরি (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুসলিম ব্যক্তির ওপর যে সব দুঃখ-কষ্ট, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি আপতিত হয়, এমনকি যে কাঁটাতার দেহে বিদ্ধ হয়, এসবের দ্বারা আল্লাহতায়ালা তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৩১৪)
কল্যাণ লাভ: ধৈর্য মুমিনের মহৎ গুণ। ধৈর্য সফলতার চাবিকাঠি। ধৈর্যের অনুশীলন ছাড়া ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে সফলতা অর্জন করা অসম্ভব। দুঃখ-কষ্ট ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সময় ধৈর্য ধারণ করা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। সুহাইব (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের বিষয়টা বড়ই আশ্চর্যজনক! যখন তার সুখের কিছু হয়, আর সে শোকরিয়া আদায় করে, সেটাও তার জন্য কল্যাণকর। আবার যদি কোনো কষ্টের কিছু হয়, আর সে ধৈর্য ধারণ করে, সেটাও তার জন্য কল্যাণ বয়ে আনে। সব কিছুর মধ্যে তার কল্যাণই কল্যাণ।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৯৯৯)
সতর্ক হওয়ার সুযোগ: পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের কৃতকর্মের কারণেই দুনিয়াতে বিপর্যয় ও বিপদাপদ দেখা দেয়, যাতে মানুষ তাদের কৃতকর্মের কিছু শাস্তি ভোগ করে এবং যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সুরা : রুম, আয়াত : ৪১)
সঠিকটা বাছাই করা: পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষ কি মনে করে যে ‘আমরা ইমান এনেছি’ বললেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে? আর তাদের পরীক্ষা করা হবে না? আর আমি তো তাদের পূর্ববর্তীদের পরীক্ষা করেছি। অতঃপর আল্লাহ অবশ্যই প্রকাশ করে দেবেন কারা সত্যবাদী এবং কারা মিথ্যাবাদী।’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ২-৩)
লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া কাশেফুল উলূম
মাদ্রাসা, মধুপুর, টাঙ্গাইল।