ভিসা দেয়া না দেয়া ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি এবং বেসামরিক বিমান, পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ এম হাসান আরিফ। তিনি বলেন, গত ৫২ বছর ধরে বিশ্বের প্রায় সব দেশে শিক্ষা, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগে জরুরি ত্রাণ তৎপরতা, নারীর ক্ষমতায়নসহ নানাবিধ আর্থ-সামাজিক ও যুব উন্নয়নমূলক কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে সৌদিভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ওয়ার্ল্ড অ্যাসেম্বলি অব মুসলিম ইয়ুথ (ওয়ামি)। সংস্থাটি ২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশের এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর নিবন্ধিত সংস্থা হিসেবে দেশের বিভিন্ন জেলাসমূহে ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছে। বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা ওয়ামির মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার আবেদন করতে পারবেন।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর এলাকায় নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্স উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এ এফ এম হাসান আরিফ বলেন, ‘কক্সবাজারের উখিয়ায় অবস্থানরত মায়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সহায়তার জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মানবিক কার্যক্রমে সক্রিয় সহযোগী হিসেবে ওয়ামি ভূমিকা পালন করছে। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও ওয়ামির যৌথ উদ্যোগে বিশ্বের প্রায় অর্ধশত দেশের যুব প্রতিনিধিদের নিয়ে আন্তর্জাতিক যুব কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। সেই কনফারেন্সের সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসাবে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যুব উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য গাজীপুরের শফিপুরে সাত একর জমি ওয়ামিকে প্রদানের ঘোষণা দেন।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি। ভারতে এ মুহূর্তে ভিসা প্রদান কিছুটা রেস্ট্রিকশন রয়েছে। পর্যটন মন্ত্রণালয়ের বিষয় এটা না। তারা ভিসা দিবেন কি দিবেন না এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখানে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকাস্থ সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলান, সৌদি আরব থেকে আগত ওয়ামি সচিবালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর ড. আবদুল হামিদ ইউসুফ আল মাজরু ও ওয়ামি বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মোহাম্মদ রেদওয়ানুর রহমান।
সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলান বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়নে সৌদি আরব সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রিয়াদস্থ ওয়ামি প্রধান কার্যালয়ের বৈদেশিক অফিস ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ডিরেক্টর ফয়সাল সাআ’দ আব্দুল্লাহ বিন জাবির, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন, কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ, কালিয়াকৈর উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা দিল আফরোজ, মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত সালাহউদ্দিন মিয়াজি, কাজী মোহাম্মদ শাহেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আমিনুর রহমান মজুমদার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ, অ্যায়ার কমোডর অবসরপ্রাপ্ত মোহাম্মদ শওকত আলী প্রমুখ।
পরে ওয়ামি চত্বরে একটি হাসপাতালের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা। আয়োজকরা জানান, উদ্বোধন হওয়া ওয়ামি কমপ্লেক্স ভবনে রয়েছে দ্বিতলবিশিষ্ট সুপরিসর মসজিদ। ১০০ জন এতিম শিশুর জন্য উন্নত মানসম্পন্ন আবাসন ব্যবস্থা। এছাড়া একটি ক্যাডেট মাদরাসা, নুরানি ও হিফজ মাদরাসা, লাইব্রেরি, হলরুম, কনফারেন্স রুম, তরুণ শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল লার্নিংয়ের জন্য আইটি প্রশিক্ষণ সেন্টার ও ডাইনিং হল। অন্যদিকে কমপ্লেক্সের অবশিষ্ট পরিকল্পনার মধ্যে একটি হাসপাতাল, স্কুল, ভোকেশনাল সেন্টার, প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ডরমিটরি ও প্লে-গ্রাউন্ড নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।