আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী বুধবার আছড়ে পড়ছে ঘূর্ণিঝড়। সোমবারই নিম্নচাপ ‘ইয়াস’ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এই নামটি দিয়েছে ওমান। জানা গেছে, এই পার্শি শব্দের অর্থ সুগন্ধী ফুলের গাছ। যেটা জুঁইয়ের কাছাকাছি। ‘ইয়াস’ শব্দের অন্য একটি অর্থের কথাও বলা হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, এর মানে দুঃখ বা হতাশা। ইয়াসের পরে যে ঝড়টি আসবে তার নাম দেয়া হবে ‘গুলাব’। এই নামটি ঠিক করে রেখেছে পাকিস্তান।
এর আগে বাংলার অনেক এলাকা লণ্ডভণ্ড করে দেয়া ‘আমপান’ ঝড়ের নামকরণ করেছিল থাইল্যান্ড। আবার ‘ফণী’ ঝড়ের নাম দিয়েছিল বাংলাদেশ। ‘বুলবুল’ নাম ছিল পাকিস্তানের দেয়া। একটা সময়ে বিভিন্ন সংখ্যা দিয়ে ঝড়কে চিহ্নিত করা হত। কিন্তু তাতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে অসুবিধা হতো। মানুষের কাছে দুর্বোধ্য হয়ে থাকত সেই সব সংখ্যা। নামকরণের মাধ্যমে প্রতিটি ঝড়কে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করার পাশাপাশি তার সবিস্তার তথ্য নথিভুক্ত করাও সহজ হয়। ঝড়ের নামকরণের রেওয়াজ খুব বেশি দিনেরও নয়। ২০০৪ সালে শুরু হয়। সেই বছর তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রথম নামকরণও করেছিল বাংলাদেশ। নাম ছিল ‘অনিল’।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লুএমও) আঞ্চলিক কমিটি একেকটি ঝড়ের নামকরণ করে। ভারত মহাসাগরের ঝড়গুলোর নামকরণ করে এই সংস্থার অন্তর্ভুক্ত আটটি দেশ। দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং ওমান। এই প্যানেলকে বলা হয় ইকনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দা প্যাসিফিক (এএসসিএপি)। ভারতের তরফেও অনেক ঘূর্ণিঝড়ের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। সেগুলো হলো অগ্নি, আকাশ, বিজলি, জল, লহর, মেঘ, সাগর।
নামকরণের ক্ষেত্রে কিছু নিয়মও মানা হয়। যেমন, এমন নামই দেয়া হয় যা ছোট হবে এবং সাধারণ মানুষ সহজে উচ্চারণ করতে পারে। যে দেশ নাম রাখবে তার সাথে ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। খেয়াল রাখতে হয় ওই শব্দ যেন কাউকে আঘাত না করে। কোনো রকম ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ বা আতঙ্ক ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে এমন নামও রাখা যায় না। কোনো ধর্মীয় সম্পর্ক বা ব্যক্তি নামও ব্যবহার করা হয় না।
সূত্র : আনন্দবাজার