spot_img

ভারতে টিকাদানের গতি কাঙ্ক্ষিত নয়, মানলেন মোদিও

অবশ্যই পরুন

ভারতে করোনাভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণ চলছে। এ থেকে জনগণকে রক্ষায় চলমান রয়েছে টিকাদান কর্মসূচি। তবে হতাশার কথা হচ্ছে এখনো দেশটির তিন ভাগ মানুষকেও সম্পূর্ণ টিকার (দু’টি ডোজ) আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। অথচ এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক টিকাদান কেন্দ্র। এত দিন দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দাবি করে আসছিলেন যে প্রতিষেধকের কোনো সঙ্কট নেই। রাজ্যে রাজ্যে লকডাউন কিংবা বিধিনিষেধের কারণেই টিকা দেয়া কম হচ্ছে। কিন্তু এর হার যে কমছে ও প্রতিষেধকের অভাবই যে এর অন্যতম প্রধান কারণ, অবশেষে এ কথা স্বীকার করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেও।

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদির নির্দেশ ছিল, টিকাদানের গতি কমলে চলবে না। রাজ্যে লকডাউন সত্ত্বেও তা চালিয়ে যেতে হবে। কোভিড রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব দেখা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদির নির্দেশ, টিকার কাজে নিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের অন্যত্র সরানো চলবে না।

এ দিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ মোকাবিলার বিষয়ে কেন্দ্রের শীর্ষ আমলাদের সাথে বৈঠক করেন। প্রতিষেধকের (টিকা) অভাবের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী কয়েক মাসে টিকার উৎপাদন কিভাবে বাড়ানো হবে, তার রূপরেখা নিয়েও বৈঠকে পর্যালোচনা হয়।

এরই মধ্যে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে বলেছে, তৃতীয় ঢেউয়ে বড়দের পাশাপাশি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ছোটদেরও। এ ক্ষেত্রে শিশু-কিশোরর কাউকে হাসপাতালে যেতে হলে, প্রতিষেধক দিতে হবে মা-বাবাকেও। তাই এজন্য পরিকল্পনা মাফিক বন্দোবস্ত করা জরুরি। অনেকের প্রশ্ন, যেখানে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিরাই টিকা পেতে নাজেহাল, সেখানে দ্রুত ওই প্রতিষেধকের ব্যবস্থা কোথা থেকে করবে মোদি সরকার?

দেশটির সরকারবিরোধী দল কংগ্রেসের অভিযোগ, ঠিক সময়ে মোদি সরকার কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ সামলানোর প্রস্তুতি নেয়নি। এখন প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি বাঁচানোর জন্য এ সব লোক দেখানো বৈঠক হচ্ছে। ঠিক সময়ে প্রস্তুতি নিলে অক্সিজেন, আইসিইউ বেডের অভাবে এত মানুষের মৃত্যু হতো না। যথেষ্ট টিকার ব্যবস্থা থাকলেও সংক্রমণের হার কম থাকত। কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলেন, ‘ভারতের মানুষ যখন করোনা মহামারীর সাথে লড়ছেন, তখন প্রধানমন্ত্রী মোদি ১৩ হাজার ৪৫০ কোটি রুপির বাড়িতে প্রবেশের
প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’

জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী এর আগে মূলত একাই আমলাদের সাথে বৈঠক করতেন। কিন্তু দিনে দিনে করোনা পরিস্থিতি ভয়ানক রূপ নেয়ায় বৃহস্পতিবার এ নিয়ে বৈঠকে রাজনাথ সিংহ, অমিত শাহ, নির্মলা সীতারামন, হর্ষ বর্ধন, পীযূষ গয়াল, মনসুখ মাণ্ডভিয়ার মতো মন্ত্রীরাও হাজির ছিলেন।

মোদি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডাক্তার-নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও ফ্রন্টলাইনের কর্মীদের বাদে কেন্দ্র শুধুমাত্র ৪৫ বছরের বেশি বয়সিদেরই টিকাদানের দায়িত্ব নেবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বুধবার পর্যন্ত এই গোষ্ঠীরও মাত্র তিন কোটি ১৪ লাখ মানুষকে দু’ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। যা দেশের জনসংখ্যার তিন ভাগেরও কম। প্রধানমন্ত্রী মোদির বৈঠকে অবশ্য আমলাদের দাবি ছিল, ৪৫ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে প্রায় ৩১ ভাগ মানুষকে অন্তত এক ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে।

গত ১ মে থেকে ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের জন্য প্রতিষেধকের ছাড়পত্র দেয়া হয়। কিন্তু বেশিরভাগ রাজ্যই এখনো প্রতিষেধকের অভাবে ৪৫-অনূর্ধ্বদের টিকাদান শুরু করতে পারেনি। মোদি সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৪৫ বছরের বেশি বয়সি ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য টিকার অভাব নেই। ১৭ দশমিক ৭ কোটি টিকার ডোজ রাজ্যগুলোকে পাঠানো হয়েছে। রাজ্যগুলোর কাছে এখনো ৮৯ লাখ টিকা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদির সাথে মন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের ওই বৈঠকের পর্যালোচনার তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ১২টি রাজ্যে এখন এক লাখের বেশি কোভিডের অ্যাক্টিভ কেস রয়েছে। যে সব রাজ্যে ১০০ জনের কোভিড পরীক্ষা হলে, ১০ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে ও আইসিইউ বা অক্সিজেনসহ বেডের ৬০ ভাগই পূর্ণ, ওইখানে সার্বিক লকডাউন জারির পরামর্শও দেয়া হয়েছে।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

সর্বশেষ সংবাদ

জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে চেষ্টা করছে সরকার: বাণিজ্য উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক মুক্ত প্রবেশের সুবিধা (জিএসপি) ফিরে পেতে শ্রম অধিকার সংক্রান্ত দেশটির চাহিদা পূরণ করতে হবে।...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ