ভারতের ‘সারেগামাপা’ থেকে উঠে আসা বাংলাদেশের কণ্ঠশিল্পী নোবেলের বিরুদ্ধে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে মিথ্যাচার করার অভিযোগ উঠেছে । সম্প্রতি দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার পর দাবি করেছিলেন, এক বয়স্ক মানুষকে বাঁচাতেই তার এই দুর্ঘটনা। তার ভাষায়, ‘এক বয়স্ক লোক অসতর্কভাবে রাস্তা পার হচ্ছিলো। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আমার এই অবস্থা। তবুও মনে তৃপ্তি অনুভব করছি, কারণ লোকটা নিরাপদ আছে। আর আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি।’
কিন্তু সেই দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য ও ভিডিও প্রকাশের পর নোবেলের মিথ্যাচারের বিষয়টি সামনে আসে।
গত বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) রাতে বাম চোখে ব্যান্ডেজ করা একটি ছবি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেয়ার করেন নোবেল। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, আসসালামু আলাইকুম। শুভরাত্রি। সড়ক দুর্ঘটনায় রাস্তাটি গুরুতরভাবে আহত হয়েছে। রাস্তাটির জন্য দোয়া করবেন।
এর পরদিনই শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকালে আরও একটি পোস্ট করেন নোবেল। ছবিতে রক্তাক্ত মুখ দেখা যাচ্ছে তার। ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘এক বয়স্ক লোক অসতর্কভাবে রাস্তা পার হচ্ছিল। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আমার মাথার তালুতে ১২টা, বাম পাশের ভ্রু-তে ১৮টা, মোট ৩০টা সেলাই পড়েছে। তবুও মনে তৃপ্তি অনুভব করছি কারণ লোকটা নিরাপদ আছে। আর আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।’
কিন্তু এরপরই শোয়াইব বিন আহসান নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী তার ফেসবুক প্রোফাইলে নোবেলের ওই পোস্ট শেয়ার করে নোবেলের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তোলেন।
ফেসবুকে শোয়াইব লিখেছেন, রং সাইডে বাইক চালিয়ে সাইকেল আরোহী রোজাদারের ওপর দিয়ে এভাবেই বাইকটা চালাইয়া দিলা। যেখানে লোকটা সারাদিন পানাহারের পর ইফতার করে তার ক্ষুধা নিবারণের কথা, সেখানে লোকটা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে। আর তুমি একজন রোজাদারকে মৃত্যুর পথযাত্রী বানাইয়া আরেকজন বৃদ্ধকে জীবনদানের গল্প শুনাও! কী সুন্দর মিথ্যাচার করে আবার আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছে!
শোয়াইব বিন আহসান বলেন, ‘ঘটনাটি ইফতারের ১৫-২০ মিনিট আগের, গুলশান-২-এর আজাদ মসজিদের ৩৫ নম্বর রোডে। একজন সাইকেল আরোহী ওই রাস্তা ধরে যাচ্ছিলেন। এ সময় উল্টোদিক (রং সাইড) থেকে প্রচণ্ড গতিতে বাইক চালিয়ে এসে তাকে ধাক্কা দেন নোবেল। এতে দুজনই গুরুতর আহত হন। আমিসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন সাইকেল আরোহীকে প্রথমে ল্যাবএইড ও পরে শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজে পাঠাই। এ সময় নোবেলকেও মেডিকেলে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে ‘ঠিক আছেন’ দাবি করে বাইক নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত সরে পরেন।
বৃদ্ধকে বাঁচানোর গল্প মিথ্যা দাবি করে তিনি বলেন, সাইকেলওয়ালা লোকটির বয়স আনুমানিক ২৫-৩০ বছর। কোনোভাবেই বৃদ্ধ নন। দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই একটি বাড়িতে সিসিটিভি রয়েছে। তার ফুটেজ চেক করলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।