এবার খোঁজ পাওয়া গেল নতুন এক ‘সুপার’ আর্থের যা আমাদের পৃথিবী থেকে ৩৬ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা এই গ্রহের খোঁজ পেয়েছেন। সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
পৃথিবীতে এক বছর যেমন ৩৬৫ দিনে হয়, ওই গ্রহটিতে কিন্তু হয় মাত্র আড়াই দিনে। সঠিকভাবে বলতে গেলে ২ দিন ৯ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে। জিজে ৭৪০ নামের গ্রহটি ওইটুকু সময়েই তার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে পারে। তাহলে সেখানে সময়ের দাম কী হতে পারে ভেবে দেখুন একবার!
আড়াই দিনে বছর মানে মোটামুটি পাঁচ ঘণ্টায় এক একটা মাস। চাকুরিজীবীদের পোয়াবারো। পাঁচ ঘণ্টা অন্তর মাস-মাইনে পকেটে ঢুকবে। তবে ছুটির দিন বলে আদৌ কিছু থাকবে কি না সন্দেহ। ছুটির মজা নিতে হবে মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে। মজা আরও আছে। আড়াই দিন পর পর জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী পালন করতে পারবেন। তাতে মোটা খরচের ধাক্কাও থাকবে। তবে চিন্তা কী, বেতন তো পাচ্ছেন পাঁচ ঘণ্টা অন্তর।
গোলমাল হবে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান থাকলে। পৃথিবীর নিয়মে সাতদিনের ছুটি নেয়া মানে তো এখানে আপনাকে প্রায় তিন বছরের ছুটি নিতে হবে। এতবড় ছুটি কোনও ‘দয়ালু বস’ অনুমোদন করবে কি? ১০ মিনিটে এক দিন মানে ১০ মিনিটে সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত দেখে ফেলতে পারবেন। পাঁচ মিনিট দিন আর পাঁচ মিনিট রাত। ঋতু পরিবর্তনও হবে কিছু বুঝে ওঠার আগেই। বয়সের হিসাব রাখাটাই হবে সবথেকে মজার। পৃথিবীর নিয়মে এক বছরের শিশুর বয়স গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় ৪৮ বছর।
কিন্তু এই গ্রহ কি আদৌ মানুষের বসবাসের যোগ্য? বিজ্ঞানীরা বলছেন, অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে বিষয়টা। রেড ডোয়ার্ফের (মৃত ঠান্ডা তারা) কাছাকাছি থাকা এই জিজে ৭৪০-এর মতো গ্রহগুলোর ক্ষেত্রে সমস্যা হল বাসযোগ্য জায়গা খুবই ছোট। গ্রহটি তারার যত বেশি কাছে থাকবে দু’জনের একই বেগে ঘূর্ণনের সম্ভাবনা হবে তত বেশি। এ কারণে গ্রহের একদিক সবসময় ফুটন্ত গরম অন্যদিক সবকিছু জমিয়ে দেয়া ঠান্ডা হবে। একদিকে সবসময় দিন অন্যদিকে রাত্রি।
পৃথিবী এবং শনির মতো যদি বায়ুমণ্ডল থাকে তবে কিছুটা সুরাহা হতে পারে। তাপমাত্রার এই চরম বৈষম্য দূর করতে পারে বায়ুমণ্ডলই। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আরও বেশ কিছু বিষয় অনুকূল হলে সেখানে প্রাণের সঞ্চার হতেই পারে। ‘সূর্য’ অবশ্য অনেক বড় দেখাবে এবং গাছপালাও সবুজ নয়, দেখতে হবে কালো রঙের। কিন্তু মানুষ বেঁচে থাকতে পারবে।
সূত্র: স্পেস ডট কম।