শনিবার শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রোববার রাজ্যে এসে মমতাকে পাল্টা আক্রমণ করলেন অমিত। শীতলকুচির ঘটনার জন্য মমতাকেই দায়ী করলেন তিনি। এদিন নদীয়ার শান্তিপুরের পর বসিরহাটে জনসভা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই জনসভা থেকে মমতাকে নিশানা করলেন তিনি। তৃণমূলের বিদায়ের ডাক দিলেন অমিত শাহ।
কী বললেন শাহ–
• কোচবিহারে যা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। কিন্তু মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি ঠিক নয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সবাই ঘিরে ফেলেছিল। বাধ্য হয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালায়।
• গুলিতে ৪ জনের মৃত্যু হয়। ওই একই জায়গায় সকালে আনন্দ বর্মণ নামের এক বিজেপি কর্মীকে গুলি করে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা।
• দিদি ৪ জনকে শ্রদ্ধা জানালেন। কিন্তু আনন্দর মৃত্যু নিয়ে কোনো মন্তব্য করলেন না। কারণ, আনন্দ রাজবংশী সম্প্রদায়ের যুবক।
• আমার সভা শেষ হলেই সবাই ৫০ জনকে ফোন করে বলবেন, দুর্নীতি, তোলাবাজি, কাটমানি দূর করার জন্য বিজেপি-কে ভোট দিতে। এ ভাবেই এই বার্তা ছড়িয়ে পড়বে।
• মোদীজি চান পশ্চিম বাংলার মানুষের উন্নতি। আর দিদি চান ভাইপোর কল্যাণ। পশ্চিম বাংলার মানুষের উন্নতির জন্য বিজেপি-কে ভোট দিন।
• দিদি অনুপ্রবেশ রুখতে পারেননি। আমরা ক্ষমতায় এলে একটা পাখিকেও ঢুকতে দেব না। যারা দুর্নীতি করেছে তাদের জেলে ঢোকানো হবে।
• বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলেই কৃষক ১৮ হাজার করে টাকা পাবেন। জেলেরা ৬ হাজার করে টাকা পাবেন। চিকিৎসার জন্য ৫ লক্ষ করে টাকা দেয়া হবে সবাইকে।
• দিদির এক মহিলা নেত্রী তফসিলি সম্প্রদায়ের মানুষদের ভিখারি বলছেন। এত বড় সাহস।
• কিছু দিন আগে ওখানেই সভায় দিদি মহিলাদের বলেছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ধরতে। দিদির উস্কানিতেই এই ঘটনা ঘটেছে।
• বাংলায় দিদির বিদায়ের সময় এসে গিয়েছে। ১০ বছর শাসন করেছেন দিদি। তাকে কি আর ছোট বিদায় দেয়া যায়। দিদির বিদায়ও বড় করে হবে। ২০০ আসন নিয়ে দিদিকে বিদায় দেব।
• সবাই পরিবর্তনের সঙ্কল্প নিন।
এদিন শান্তিপুরেও বাহিনীর গুলি চালনার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর উস্কানিকে কাঠগড়ায় তোলেন অমিত শাহ। অমিত শাহের মন্তব্য, ‘কালকের ঘটনা দুঃখজনক। কিন্তু বুথে অজ্ঞাতপরিচয় জনাকয়েক হামলা করেছিল। সিআরপিএফ-এর উপর হামলা করা হয়েছে। তারপর আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে হয় সিআরপিএফ-কে। তাতে চারজনের মৃত্যু হয়। সেই মৃত্যু দুঃখজনক। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য আরও দুঃখজনক। ওই এলাকাতেই রোববার সকালে আনন্দ বর্মনকে খুন করা হয়েছে। তৃণমূলের দুষ্কৃতীরাই এটা করেছে। কিন্তু মমতা দিদি চারজনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। আনন্দ বর্মনকে নয়। মমতা দিদি এখানেও মেরুকরণের রাজনীতি করছেন। কারণ আনন্দ বর্মন রাজবংশী সম্প্রদায়ের। ওখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট পাবেন না, তাই কোনো শ্রদ্ধা নেই।’
এরপর মমতাকে কাঠগড়ায় তুলে শাহ বলেন, ‘আপনি শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার কথা বলেছিলেন। আপনার সেই ভাষণ কি এই মৃ্ত্যুর জন্য দায়ী নয়? এই ঘটনা ছাড়া আর কোথাও অশান্তি হয়নি। আপনিই এই ঘটনার জন্য দায়ী। আপনি ক্ষমা চান।’
একইসাথে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, ‘বাংলার নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। বাংলায় নতুন যুগের সূচনা হচ্ছে। আর বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাংলা থেকে অশান্তি চিরতরে দূর হয়ে যাবে।’
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস