পটুয়াখালী জেলার নিশানবাড়িয়ায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হতে যাচ্ছে। ৩১ মার্চ এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে। এতে বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ অংশীদারিত্ব রয়েছে ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। এটি দেশের প্রথম এবং বৃহত্তর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে পরিবেশবান্ধব আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে। এক হাজার একর জমির ওপর নির্মিত তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনের জন্য দৈনিক ১৩ হাজার টন কয়লা ব্যবহূত হচ্ছে।
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় বাংলাদেশের নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) মধ্যে যৌথ উদ্যোগের চুক্তি হয়। পরে গঠিত হয় বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর। এখান থেকে উৎপাদিত ৬২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাণিজ্যিকভাবে দক্ষিণবঙ্গের জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। এর আগে গোপালগঞ্জ থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত ১৬০ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করে চালু করা হয়। গোপালগঞ্জের গ্রিড থেকে ঢাকার আমিন বাজার পর্যন্ত সঞ্চালন লাইনের নির্মাণকাজ চলছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে লাইনের নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রয়োজনীয় কয়লা ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া থেকে সরাসরি বন্দরের নিজস্ব টার্মিনালে ভিড়ছে। কয়লা ব্যবহারে পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষার জন্য এখানে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
শ্রমিকদের জন্যও আছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ঠিকাদার নিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষরের পর ১২ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের প্রায় ৮০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে চীনের এক্সিম ব্যাংক ও চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। মূল কাজের পুরো তদারকি করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।