spot_img

পবিত্র শবে মিরাজের তাৎপর্য ও শিক্ষা?

অবশ্যই পরুন

রাসুল (সা.) যখন সব দিক থেকে মারাত্মক সংকট ও শোকের সম্মুখীন হয়েছিলেন, তখন আল্লাহ তার প্রিয় হাবিবকে সান্নিধ্য লাভের সুযোগ দিয়েছিলেন। পার্থিব জীবনের অভিভাবক চাচা আবু তালেবের মৃত্যু, প্রাণপ্রিয় সহধর্মিণী উম্মুল মুমিনিন খাদিজা (রা.)-এর ইন্তেকাল, তায়েফের হৃদয়বিদারক ঘটনা, মক্কার কাফিরদের অমানবিক আচরণ, নির্যাতনসহ বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন বিপন্ন ও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল।

মিরাজের মাধ্যমে তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়, কালো রাতের পরই আছে উজ্জ্বল প্রভাত। ইসলামের বিজয় সমাগত। এরই সঙ্গে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁকে পূর্ণতা লাভের সবকও দান করেছিলেন। আল্লাহ মহানবী (সা.)-কে আলমে বরজখ, জান্নাত, জাহান্নাম, লওহ-কলম, আরশ-কুরসি প্রত্যক্ষ করান। তাই ইসলামের ইতিহাসে মিরাজ অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ।

ইসরা ও মিরাজের  মধ্যে পার্থক্য
ইসরা অর্থ নৈশভ্রমণ, রাত্রিকালীন ভ্রমণ। আর মিরাজ অর্থ সিঁড়ি, ঊর্ধ্বলোকে গমন, সোপান, মই। মিরাজ তথা ঊর্ধ্বলোকে গমনের কথা হাদিস দ্বারা আর ইসরা তথা নৈশভ্রমণের কথা কোরআন মজিদ দ্বারা প্রমাণিত। ইসরাকে অস্বীকারকারী কাফির হবে, কিন্তু মিরাজকে অস্বীকারকারী কাফির হবে না, তবে মহাপাপী হবে।

ইসরা সম্পর্কে সব মুসলমানের ঐকমত্য রয়েছে। শুধু ধর্মদ্রোহী যিন্দীকরা একে মানেনি। মিরাজ থেকে ফিরে এসে ভোরবেলা যখন নবীজি (সা.) রাতের সফরের ঘটনা শোনালেন, তখন কোরাইশ নেতারা তা অস্বীকার করতে লাগল। এত অল্প সময়ে মক্কা শরিফ থেকে বায়তুল মুকাদ্দাসে গমন তাদের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হলো। তাদের মধ্যে যে এর আগে মসজিদে আকসা ভ্রমণ করেছে সে জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা বায়তুল মুকাদ্দাসের কিছু বিবরণ শোনান দেখি। অমনি আল্লাহ তায়ালা মসজিদের বাস্তব চিত্র নবীজি (সা.)-এর সামনে হাজির করে দিলেন আর তিনি দেখে দেখে সব বলে দিলেন। (বুখারি-৪৭১০)

সশরীরে মিরাজে আল্লাহর রাসুল (সা.)
মহানবী (সা.)-এর মিরাজ সশরীরে হয়েছে। তার দেহ ও আত্মা উভয়ই মিরাজে গমন করেছে। কেননা আল্লাহ তাআলা প্রিয় নবী (সা.)-এর মিরাজ গমনকে তাঁর এক বিশেষ মুজিজা হিসেবে গুরুত্ব সহকারে কোরআন মজিদে বর্ণনা করেছেন। যদি মিরাজ গমন কেবল আত্মিক হতো, তবে তা তার মুজিজা হতো না। কেননা মুজিজা কখনো গাইরে নবী থেকে প্রকাশ পেতে পারে না। অথচ বেহেশত, দোজখ, আরশ, কুরসি পর্যন্ত কোনো কোনো আউলিয়াও আত্মিকভাবে সফর করতে পারেন। অবশ্য কোনো অলি সশরীরে তথায় গমন করতে অক্ষম। সুতরাং মিরাজ গমন সশরীরে সংঘটিত হয়েছে বলে স্বীকার করলেই তা মুজিজা হিসেবে গণ্য হয়।

কোরআন  মজিদে বর্ণিত আয়াতের শব্দের প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যায় যে মহানবী (সা.)-এর মিরাজ গমন সশরীরেই সংঘটিত হয়েছিল। যেমন—‘সব দুর্বলতা থেকে পবিত্র ওই আল্লাহ, যিনি নিজের (সর্বশ্রেষ্ঠ) ‘আবদ’-কে—অর্থাৎ বান্দাকে রাতারাতি মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত নিয়ে গেছেন।’ এখানে বিশ্বনবীর নাম মুবারকের স্থলে আল্লাহর বিশেষ আবদ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যা মহানবীর একটি বিশেষণ। ‘আবদ’ শব্দের অর্থ হলো বান্দা, এই আবদ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ইবাদত থেকে। ইবাদত অর্থ বন্দেগি। রুহবিহীন দেহ ‘আবদ’ নয় এবং দেহবিহীন রুহও আবদ নয়। বরং আবদ হতে হলে রুহ ও দেহ দুটিই সম্মিলিতভাবে থাকতে হয়। কাজেই মিরাজের  ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলা যখন আপন ‘আবদ’-কেই নিয়ে গেছেন বলে উল্লেখ আছে, তখন প্রমাণিত হয়েছে যে রুহ ও দেহ উভয়ই নিয়ে গেছেন।

মিরাজের শিক্ষা ও তাৎপর্য
মিরাজের ঘটনা থেকে মুমিন খুঁজে পায় সঠিক পথের দিশা, লাভ করে আল্লাহর অপার অনুগ্রহ ও দ্বিনের অবিচলতা। আমাদের প্রিয় নবী (সা.) যে আল্লাহ তাআলার কাছে কত দামি ও মর্যাদার অধিকারী, তা এ ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়। তাকে এমন মর্যাদা দান করা হয়েছে, যা অন্য কোনো নবীকে দান করা হয়নি। এ ঘটনার ফলে মুমিনের ঈমান মজবুত হয় এবং হূদয়ে বিশ্বনবী (সা.)-এর ভালোবাসা সুগভীর হয়।

সর্বশেষ সংবাদ

গুঞ্জন উড়িয়ে ম্যানসিটিতে আরও ২ বছর থাকছেন পেপ গার্দিওলা

গুঞ্জন ছিল ম্যানচেস্টার সিটি ছেড়ে ব্রাজিলের দায়িত্ব নিতে পারেন কোচ পেপ গার্দিওলা। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের কষ্ট দিয়ে বৃহস্পতিবার (২১...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ