প্রশ্ন : আমি একবার কসম করেছিলাম যে, আমি ‘অমুক’ খারাপ কাজটি চারবারের বেশি করব না। কিন্তু দেখা গেছে, আমি এরচেয়েও বেশিবার কসম ভেঙে সেটা করেছি। তাহলে এ থেকে আমার মুক্তির উপায় কি? একটু জানাবেন।
উত্তর : কসম করার পর ভেঙে ফেললে কসমের কাফফারা আদায় করতে হয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কসম করে ভাঙার কারণে কাফফারা আদায় করতে হবে। প্রসঙ্গত, গুনাহের কাজের কসম করা জায়েজ নেই। কিন্তু কেউ কসম করে ফেললে, কসম হয়ে যায়।
কাফফারা আদায়ের পদ্ধতি
কসমকারী নিজের পরিবারকে নিয়ে মধ্যম ধরনের যে খাবার গ্রহণ করে থাকেন, দশজন মিসকিনকে দুই বেলা সে রকম খাবার খাওয়াবে। অথবা দুই জোড়া কাপড় দেবে।
স্বাভাবিকভাবে, সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকাকে একদিনের খরচ ধরা হবে। সেই হিসেবে সদকায়ে ফিতর পরিমাণকে দশ দিয়ে গুণ দিলে যত টাকা হয়,তাই হবে কসমের কাফফারা। যেমন গত রমজানে সদকায়ে ফিতির ছিল সর্বনিম্ন ৭০ টাকা। সেই হিসেবে ৭০০ টাকা হবে কসমের কাফফারা। লক্ষণীয যে, এটি পরিবর্তিত হতে পারে।
যদি টাকা দিয়ে কাফফারা আদায় করতে সক্ষমতা না থাকে, তাহলে তিনটি রোজা রাখার মাধ্যমে কাফফারা আদায় করতে হবে।
কসমের ব্যাপারে কোরআন-হাদিস
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাকড়াও করেন না— তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; কিন্তু পাকড়াও করেন ওই শপথের জন্যে যা তোমরা মজবুত করে বাধ। অতএব, এর কাফফরা এই যে, দশজন দরিদ্রকে খাদ্য প্রদান করবে; মধ্যম শ্রেনীর খাদ্য যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে দিয়ে থাকো। অথবা তাদের বস্তু প্রদান করবে অথবা একজন ক্রীতদাস কিংবা দাসী মুক্ত করে দেবে। যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে না, সে তিন দিন রোজা রাখবে। এটা কাফফরা তোমাদের শপথের, যখন শপথ করবে। তোমরা স্বীয় শপথগুলো রক্ষা করো, এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নির্দেশ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করো।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৮৯)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন—
যে ব্যক্তি কোনো কিছুর কসম করে, তারপর এর বিপরীত কাজে কল্যাণ দেখে, তাহলে সে যেন উক্ত কল্যাণধর্মী কাজটি করে এবং স্বীয় কসমের কাফফারা দিয়ে দেয়।
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬২৪৭; মুসলিম, হাদিস : ৪৩৬২; মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৮২৫১; সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৪৩৫২)