কয়েক দশক ধরে ওয়াল স্ট্রিটে ব্যবসা করে আসা চীনের একটি বড় তেল কোম্পানিকে নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ শুক্রবার তালিকা থেকে বাদ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। চীনের এই তেল কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের স্নায়ুযুদ্ধের সর্বশেষ বলি হচ্ছে।
জানা যায়, চীনের তৃতীয় সর্ববৃহৎ তেল কোম্পানি সিএনওওসি (সিইও) এবং তাদের সবচেয়ে বড় অফসোর তেল উত্তোলনকারী এই তালিকার বাইরে থাকবে। অর্থাৎ নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে তাদের আর কোনও লেনদেন হবে না। তাদের শেয়ারের বেচাকেনা আগামী ৯ই মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যাবে। সূত্র: অনলাইন সিএনএন।
নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে বলা হয়েছে, তারা নভেম্বরে স্বাক্ষর করা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নির্দেশ মেনে এটা করছেন।এর ফলে চীনের ওই কোম্পানিতে মার্কিনিদের বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মার্কিন সরকারের সন্দেহ চীনের ওই কোম্পানির নিয়ন্ত্রক বা মালিক হতে পারে চীনের সেনাবাহিনী।
এমন শাস্তির মুখোমুখি হওয়া এটা চীনের চতুর্থ কোম্পানি। নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ জানুয়ারিতে বলেছে যে, ট্রাম্পের নির্দেশ মেনে চায়না মোবাইল, চায়না টেলিকম এবং চায়না ইউনিকমের শেয়ারের বেচাকেনা বন্ধ করে দেবে। তারপর থেকে তারা ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। তবে নিউ ইয়র্কে সিএনওওসি (সিইও) ব্যবসা করে আসছে ২০০১ সাল থেকে।
রোববার তারা নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে। সতর্ক করেছে যে, তারা হংকং স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হতে ফাইল জমা দিচ্ছে। কারণ, নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তি থেকে বাদ দেয়ায় কোম্পানির শেয়ার ও আকারে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। একই সঙ্গে তারা সব বিষয় নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ওদিকে হংকংয়ে কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য সোমবার শতকরা ১.১ ভাগ পতন হয়েছে।
সিএনওওসি (সিইও)-এর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের টার্গেট এটাই প্রথম নয়। ট্রাম্প ক্ষমতায় থেকে বিদায় নেয়ার মাত্র কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চীনা এই কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করে, যেসব কোম্পানির সঙ্গে মার্কিনিদের কোনও সরবরাহ অথবা প্রযুক্তিগত সম্পর্ক থাকবে না। ওই সময়কার বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রোজ এটাকে চীনের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বলে অভিহিত করেছিলেন।
তিনি আরও দাবি করেছিলেন, দক্ষিণ চীন সাগরে অন্য দেশগুলোকে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে তারা হয়রানি করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তকে বেইজিং বার বার ক্ষমতার অপব্যবহার বলে অভিহিত করে আসছে। ওদিকে চীনের এই কোম্পানিকে তালিকা থেকে বাদ রাখায় মনে করা হচ্ছে বেইজিংয়ের ওপর নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও চাপ সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন।
গত মাসে তার প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে, চীনের বিষয়ে কঠিন ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।