রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল খুলে দেয়ার দাবিতে আন্দোলন করছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি মোকাবেলার অংশ হিসেবে মার্চের ১৭ তারিখ থেকে দেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষা কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে পরিবেশ ঝুঁকিমুক্ত করতে হবে। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের পরেই শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেয়ার একটি পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা ভ্যাকসিন পাবে?
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেয়ার একটি পরিকল্পনা করেছে সরকার। তিনি বলেন, ‘এখন তো ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা টিকা নিচ্ছেন। এরপরের ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে যে শিক্ষার্থীরা থাকেন, তাদেরও টিকা দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ভ্যাকসিন দেয়া সম্পন্ন হলেই বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হতে পারে।’
বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখ থেকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বা টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। শুরুতে মহামারী মোকাবেলায় সম্মুখসারির কর্মী ও ৫৫ বছরের বেশি বয়সী দেয়ার কথা থাকলেও, টিকাদান কর্মসূচী শুরুর একদিন পরেই বয়সসীমার শর্ত কিছুটা শিথিল করে সরকার।
সেসময় টিকা দেয়ার বয়সসীমা ৪০ বছর করা হয়। এখন পর্যন্ত সম্মুখসারির কর্মী এবং ৪০-ঊর্ধ্ব বয়সীরাই টিকা নিতে পারছেন।
কিন্তু অধ্যাপক চন্দ বিবিসিকে বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের বিশেষ বিবেচনায় টিকা দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’ তবে কবে নাগাদ এই শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া শুরু হতে পারে সে সম্পর্কে তিনি ধারণা দিতে পারেননি।
ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিশেষ বিবেচনায় টিকা দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। অধ্যাপক চন্দ বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয়ভাবে নেয়া হবে, অর্থাৎ শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আলোচনার পরই খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে এ বিষয়ে একটি বৈঠক করতে যাচ্ছে। মহামারীর কারণে মার্চের ১৭ তারিখ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবাসিক হল খালি করে সব ধরণের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
পরে সেশনজট নিরসনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে ক্লাস নেয়া শুরু করে কর্তৃপক্ষ। যদিও অনলাইনে ক্লাসের সুবিধা সমানভাবে শিক্ষার্থীরা নিতে পারেননি, এমন সমালোচনা রয়েছে।
এদিকে, সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় ছুটির মেয়াদ বাড়িয়েছে, সর্বশেষ ঘোষণায় ২৮শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হবার পর মার্চের ২৬ তারিখ থেকে ৬৬দিন সাধারণ ছুটি ছিল।
এরপর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালুর অংশ হিসেবে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া ক্রমে সব ধরণের প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়।
সূত্র : বিবিসি