ঠিক কিভাবে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছে তা নির্ধারণে কয়েক বছর লাগতে পারে। মঙ্গলবার এমন মন্তব্য করেছেন চীনের উহান সফররত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)- এর আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য ড. পিটার দাশাক।
ড. পিটার দাশাক সিএনএন-কে বলেন, শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা কোভিড-১৯-এর উদ্ভবের একটি পরিষ্কার চিত্র পাবেন। তবে সেটি পেতে কয়েক সপ্তাহ, মাস বা এমনকি কয়েক বছরও লেগে যেতে পারে।
তিনি বলেন, ডিসেম্বরে আগে চীনের অন্যান্য অঞ্চলে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সম্ভবত এই ভাইরাসটি অন্য কোনও দেশ থেকে সেখানে প্রবেশ করেছিল।
ড. পিটার দাশাক বলেন, উহানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৭ জন এবং চীনের ২০ জন বিজ্ঞানী বহু ল্যাব পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তারা পরিচালক এবং স্বতন্ত্র বিজ্ঞানীদের সত্যিই কঠিন সব প্রশ্ন করেছিলেন। সেগুলো প্রকাশ করা হবে।
এদিকে চীনের গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার তত্ত্বও খারিজ করে দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবার দলটির প্রধান বলেছেন, উহানের গবেষণাগার থেকে করোনার ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। সংক্রমণের খবর প্রকাশের পর বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছিলেন, ভাইরাসটি সম্ভবত চীনের উহান শহরের কোনও এক বাজারের বন্যপ্রাণীর শরীর থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন শুরু থেকেই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জন্য চীনকে দায়ী করে আসছে। সঙ্গে আরও কিছু পশ্চিমা দেশ এই ভাইরাসের উৎস সম্পর্কে তদন্তের দাবি তুলেছিল।
চীন সফররত ডব্লিউএইচও’ তদন্ত দলের প্রধান পিটার বেন এম্বারেক মঙ্গলবার গবেষণাগার থেকে করোনার ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, উৎস শনাক্তে আরও অনেক কাজ প্রয়োজন।
এম্বারেক এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, তদন্তে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তা মহামারির পরিস্থিতির ক্ষেত্রে নাটকীয় পরিবর্তন আনেনি।
প্রাথমিকভাবে অবশ্য একাধিক গবেষণায় অনুমান করা হয়েছিল, বাদুড়ের দেহ থেকে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। কারণ বাদুড়ের শরীরে এমন একটি জিনের হদিশ মিলেছিল, যার সঙ্গে সার্স-কোভ-২-এর ৯৬ শতাংশ মিল আছে। কিন্তু বাদুড়ের শরীরে যে করোনাভাইরাস থাকে, তা মানুষের ফুসফুসের কোষের রিসেপটরে কার্যকারী হতে পারে না। এম্বারেক বলেন, ‘উহান শহর বা সেখানের পরিবেশ যেহেতু বাদুড়ের বাসস্থানের কাছাকাছি নয়, তাই উহান শহরের বাদুড়ের শরীরে সংক্রমণের বিষয়টি খুব একটা সম্ভব নয়।’সূত্র: সিএনএন, বিবিসি।