খেলার সময় ১০ মিনিট স্পর্শ করার আগেই লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান সেন্টার ব্যাক এডার মিলিতাও। শেষ পর্যন্ত ১০ জনের রিয়ালের মাঠ এস্তাদিও আলফ্রেড ডি স্টেফানো থেকে ২-১ গোলের ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে লেভান্তে। রিয়ালের হয়ে একটি গোল করেন মার্কো অ্যাসেন্সিও, আর লেভান্তের গোল দুটি আসে হোসে লুইস মোরালেস ও রজারের পা থেকে।
তবে ম্যাচের ফলাফল হতে পারতো আরও বিষাদময়। যদিনা রজারের নেওয়া পেনাল্টি থিবো কোর্তোয়া রুখে না দিতেন। তবে পেনাল্টি ঠেকাতে পারলেও দলের পরাজয় রুখতে পারেননি বেলজিয়ান এই গোলরক্ষক। যে রজারের পেনাল্টি রুখেছিলেন কোর্তোয়া, সেই রজারই গোল করে লেভান্তেকে পূর্ণ তিন পয়েন্ট এনে দেন।
খেলা শুরুর ছয় মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত এক প্রতি-আক্রমণে লিড নিতে পারতো রিয়াল মাদ্রিদ। লেভান্তের কর্নার থেকে বল পেয়ে দারুণ গতিতে বল নিয়ে এগিয়ে যান এডেন হ্যাজার্ড। বাঁ দিক থেকে উঠে আসা করিম বেনজেমাকে বল বাড়ান তবে বাধা হয়ে দাঁড়ান লেভান্তে গোলরক্ষক। তাকে বোকা বানিয়ে বল জালে জড়াতে ব্যর্থ বেনজেমা। এরপরেই বদলে যায় ম্যাচের চিত্র।
নয় মিনিটের মাথায় বল নিয়ে রিয়ালের ডি বক্সের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সার্জিও লিয়ন। আর তখনই ডি-বক্সের ঠিক বাইরে তাকে ফাউল করেন মিলিতাও। শুরুতে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারকে হলুদ কার্ড দেখালেও ভিএআরের সাহায্যে লাল কার্ড দেখান রেফারি। আর ম্যাচের প্রায় পুরোটা সময়ই ওই ১০ জন নিয়ে খেলতে হয় লস ব্ল্যাঙ্কোসদের।
একজন খেলোয়াড় কম নিয়েও রিয়াল মাদ্রিদ বেশ আক্রমণই করে খেলছিল। আর ১৩তম মিনিটে লিডও নেয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। টনি ক্রুসের দুই লাইন গায়েব করে দেওয়া এক থ্রু পাসে বল নিয়ে তিন ডিফেন্ডারের সামনে দিয়ে গোল করেন মার্কো অ্যাসেন্সিও। ২৫তম মিনিটে রজার মার্তির দুটি চেষ্টা ঠেকিয়ে দেন থিবো কোর্তোয়া। নিজেদের অর্ধে ফারল্যান্ড মেন্ডি হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে বল পেয়ে যান মার্তি। প্রথমবার নেন গড়ানো শট, ঝাঁপিয়ে সেটি ঠেকিয়ে দেন রিয়াল গোলরক্ষক। ফিরতি বলে উঁচু করে নেওয়া শটও ব্যর্থ করে দেন তিনি।
দুই মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ হাতছাড়া করেন অ্যাসেন্সিও। নিজেদের অর্ধ থেকে ফ্রি কিকে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে বল পেয়ে যান তিনি। কিন্তু শট নিতে পারেননি ঠিকমতো, বেঁচে যায় লেভান্তে। ৩২তম মিনিটে ম্যাচে সমতা আনেন মোরালেস। দূরের পোস্টে তিনি ছিলেন অরক্ষিত। কিন্তু ক্রস ঠিক সামনে ড্রপ খেয়ে উঠে যাচ্ছিল। তবুও ভলি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন লেভান্তে অধিনায়ক। কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে পাঠিয়ে দেন ঠিকানায়।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণাত্মক শুরু করা গ্যালাক্টিকোরা এগিয়ে যেতে পারত শুরুতেই। ক্রুসের থ্রু দেওয়া বলটি বিপজ্জনক জায়গায় পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি বেনজেমা। দুর্বল শট নিয়ে হতাশ করেন দলকে। ৬৩তম মিনিটে পেনাল্টি ঠেকিয়ে রিয়ালের ত্রাতা কোর্তোয়া। কোনোমতে হাত দিয়ে ব্যর্থ করে দেন মার্তির শট। খানিক আগে বদলি নামা ভিনিসিয়াস জুনিয়র কার্লোস ক্লার্ককে ফাউল করলে শুরুতে ফ্রি কিক দেন রেফারি। পরে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে দেন পেনাল্টি।
তবে ১০ জনের রিয়াল খুব বেশি সময় আর ম্যাচে থাকতে পারেনি। ৭৮তম মিনিটে এগিয়ে যায় লেভান্তে। কর্নার থেকে বল পেয়ে বুলেট গতির শটে জাল খুঁজে নেন মার্তি। লা লিগায় সবশেষ ছয় ম্যাচে রিয়ালের বিপক্ষে তৃতীয় জয় পেল লেভান্তে। স্পেনের সফলতম দলটির মাঠে শেষ চার ম্যাচে এটি তাদের দ্বিতীয় জয়, ড্র করেছিল একটি ম্যাচে।
এদিকে লা লিগায় এটি রিয়ালের চলতি মৌসুমের চতুর্থ হার। ১২ জয় আর ৪টিতে হেরে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে অবস্থান করছে দুইয়ে। এক ম্যাচ কম খেলা বার্সেলোনা ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে নেমে গেছে চারে।
সারাবাংলা/এমআরএফ/এসএস