তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ভারতের ভ্যাকসিন উপহার বন্ধুত্বের অনন্য উদাহরণ। কিন্তু দেশের কিছু রাজনৈতিক শক্তি আছে যাদের রাজনৈতিক মূল এজেন্ডা হচ্ছে ভারতবিরোধিতা।
তিনি বলেন, সৌহার্দ্যের মধ্যেই অগ্রগতি নিহিত। ভারতের সাথে মৈত্রীবন্ধন দেশের উন্নয়নে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিবেশী তিনদিকের সীমান্তের দেশের সাথে বৈরি সম্পর্ক রেখে এদেশের উন্নতি সম্ভব নয়। ভারত বিরোধিতাকেই যারা মূল প্রতিপাদ্য মনে করে রাজনীতিটা করে তারা আসলে ভুল পথে হাঁটছে।
রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৫তম বর্ষে পদার্পণ ও দেশপ্রেম দিবসে আন্তর্জাতিক সেমিনারে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, মহামারি করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ এবং ভারত যেভাবে একসঙ্গে কাজ করেছে, একইভাবে ভবিষ্যতেও দুদেশের মাঝে এ সুসম্পর্ক বজায় থাকবে।
সুভাষ চন্দ্র বসুর নেতৃত্ব ও আদর্শ বহন করেছেন বঙ্গবন্ধু। জনগণের জন্য কাজ করেছেন। দুজনেই দেশপ্রেমে জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাদের আদর্শে উজ্জীবিত হতে হবে। দেশের জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদান মনে রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী আজ নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতের ২০ লাখ ভ্যাকসিন উপহার ভালোবাসা এবং বন্ধুত্বের অনন্য উদাহরণ। ভারতের সব মানুষ এখনো ভ্যাকসিন পায়নি, তার আগেই আমাদের দেশে এটি এসেছে। এজন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। সেইসাথে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের কয়েক হাজার সৈন্য জীবন দিয়েছে, এদেশের এক কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছে এবং এরও আগে পাকিস্তানের কারাগারে বঙ্গবন্ধুকে যেন ফাঁসি দেয়া না হয়, সেজন্য ইন্দিরা গান্ধী ৩০টি দেশ সফর করে বিশ্ব জনমত গঠন করেছিলেন, সেকথাও গভীর কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিকতায় স্মরণ করি।
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর স্মৃতির প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি তথ্যমন্ত্রী ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজির আহবানে আজাদ হিন্দ ফৌজের যে ২৬ হাজার সেনানী জীবন দিয়েছিলেন, তাদের স্মৃতির প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান।
তিনি বলেন, উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর অবদান ইতিহাসে সবসময় স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে। আমাদের জন্য গৌরবের যে নেতাজি বাঙালি ছিলেন এবং অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, শৈশবেই তিনি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর নেতৃত্বের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন, তার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
ভারতের হাইকমিশনার দোরাইস্বামী তার বক্তৃতায় বাংলাদেশে নেতাজির জন্মবার্ষিকী উদযাপনকে অত্যন্ত অন্তর ছুঁয়ে যাওয়া ঘটনা বলে অভিহিত করেন এবং দু’দেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ.আ.ম.স. আরেফিন সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান আবেদ খান, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি উত্তম বড়ুয়া, আয়োজক সংগঠনের সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।