পরিবেশ দূষণ রোধে তেল ও গ্যাসের পরিবর্তে বিদ্যুৎ চালিত গাড়িকে ভবিষ্যতের বাহন হিসেবে অনুমোদন দিতে যাচ্ছে সরকার। সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এ ধরনের গাড়িকে নিবন্ধন দিতে আইন পরিবর্তণের পথে হাঁটচে। পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুৎচালিত গাড়ি বৈধতা দিতে নীতিমালা করছে সরকার।
রোববার ( ১৭ জানুয়ারি ) বিআরটিএ সদর দফতরে এ সংক্রান্ত বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের ধারনা, আগামী দশকের পর জীবাশ্ম জ্বালানি তথা তেল-গ্যাস চালিত গাড়ি থাকবে না। কিন্তু বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে এখনও বৈধ নয় ব্যাটারির চার্জে চলা বৈদ্যুতিক গাড়ি।
ইউরোপ, আমেরিকার বাজারে নিত্য নতুন দ্রুতগতির বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি আসছে। সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অনুমতি পেলে বাংলাদেশেও এগুলোর বৈধভাবে চলার পথ খুলবে। এ ধরনের গাড়ির চলার পথে বড় বাধা পথে ব্যাটারি চার্জ করা। যুক্তরাজ্যে সড়কে তেলের পাম্পের মতো গাড়ি চার্জ করার স্টেশন গড়ে উঠেছে।
বাংলাদেশেও একই সুবিধা থাকবে। চার্জিং পয়েন্ট স্থাপনের অনুমতি দেবে সরকার। বিদ্যমান মোটর চালিত গাড়ির মতো যেসব বিদ্যুৎ চালিত গাড়িতে একই রকম সুবিধা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে, শুধু সেইগুলো নিবন্ধন পাবে। এসব গাড়িরও ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেন লাগবে। অর্থাৎ, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা তথা নছিমন-করিমন অনুমোদন পাবে না।
বর্তমানে দেশে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, নছিমন, করিমনসহ নানা ধরনের বাহন চলছে। সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ এসব বাহন। এসব বাহন চার্জের কারণে প্রতিদিন আড়াই শ থেকে তিন শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হয়। সামান্য দুর্ঘটনায় চালক, যাত্রীর প্রাণ যাচ্ছে।
বিদ্যুৎ চালিত গাড়ির মধ্যে কোনটি নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য তা ঠিক করবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।যেগুলোর সড়কে নির্ধারিত গতিতে, নিরাপদে চলার ব্যবস্থা থাকবে, শুধু সেগুলোই বুয়েটের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে নিবন্ধন পাবে। ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্যুৎ চালিত অটো রিকশার আয়ুষ্কাল ৯ বছর, মোটর সাইকেলের ১০ বছর এবং হালকা, মধ্যম ও ভারী বাহনের আয়ুষ্কাল ২০ বছর ধরা হয়েছে।
সারাবিশ্বেই কার্বন ডাইঅক্সাইডের নিঃসরণ কমিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি ব্যবহারে উৎসাহ বাড়ছে। বাংলাদেশেও এ ধরনের গাড়িকে নিবন্ধনের আওতায় আনা প্রয়োজন বলে মনে করছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।
২০১৮ সালের নভেম্বরে ইলেকট্রিক মোটর যানের রেজিস্ট্রেশন ও চলাচলসংক্রান্ত নীতিমালার খসড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে পাঠিয়েছিল বিআরটিএ। পরের বছরের ৬ জানুয়ারি পর্যালোচনা সভা হয়। তখন বলা হয়, মোটরযান অধ্যাদেশের মাধ্যমেই নিবন্ধন দেওয়া সম্ভব। সেই নীতিমালা আবারও খতিয়ে দেখার জন্য গঠিত হয় সংক্রান্ত নতুন কমিটি।