যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে দেশটির অর্থনীতি ও জ্বালানি নিরাপত্তা গবেষণায় অবদান রাখার জন্য পেশাজীবী বিজ্ঞানীদের ১৯৫৯ সাল থেকে ‘আর্নেস্ট ওরলান্ডো লরেন্স পুরস্কার’ দেয়া হচ্ছে। চলতি বছর এই সম্মাননা পাচ্ছেন বাংলাদেশি পদার্থবিজ্ঞানী মোহাম্মদ জাহিদ হাসানসহ আরও সাতজন।
জাহিদ হাসান প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যায়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপনায় যুক্ত আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টিই এক বিবৃতিতে তার এ পুরস্কার প্রাপ্তির খবরটি জানিয়েছে।
গত ১২ জানুয়ারি মার্কিন জ্বালানি মন্ত্রী ড্যান ব্রোইল্লেতে এ বছরের পুরস্কারের জন্য অধ্যাপক হাসানের সঙ্গে আরও সাত বিজ্ঞানীর নাম ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে অধ্যাপক হাসান বলেন, ‘আমার সায়েন্টিফিক হিরোদের একজন আর্নেস্ট ও. লরেন্সের নামে পুরস্কারটি পেতে যাচ্ছি জেনে আমি সম্মানিত ও বিনীত অনুভব করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘লরেন্সের সাইক্লোট্রনের উদ্ভাবন আধুনিক উচ্চ-শক্তি অ্যাকসেলেটর প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। যাকে আমি আমার গবেষণায় ব্যবহার করেছি কোয়ান্টাম পদার্থের টপোলজিকাল অবস্থাগুলো অনুসন্ধান করতে।’
ঢাকাতে জন্মগ্রহণ করা জাহিদ হাসান পড়াশোনা করেন ধানমন্ডি সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় এবং ঢাকা কলেজে। ১৯৮৬ সালে এসএসসিতে সম্মিলিত মেধা তালিকায় দ্বিতীয় ও ১৯৮৮ সালে এইচএসসিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি।
পরে উচ্চশিক্ষার জন্য চলে যান অস্টিনে। সেখানে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন ভাইনভার্গের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ নিতে ভর্তি হন টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রতিষ্ঠানটির পদার্থবিজ্ঞান থেকে স্নাতক হয়ে পরে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করেন।
পিএইচডি করার সময় জাহিদ বের করেন কঠিন বস্তুর মধ্যে ইলেকট্রনের চারটি কোয়ান্টাম সংখ্যা বের করার কৌশল। এই সময় তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর আমন্ত্রণ পান। এরই মধ্যে প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী তার তত্ত্বাবধানে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন।
উল্লেখ্য, প্রখ্যাত মার্কিন বিজ্ঞানী আর্নেস্ট ওরলান্ডো লরেন্সের সম্মানে ১৯৫৯ সালে পুরস্কারটি চালু হয়। এই পুরস্কার জেতা প্রত্যেক বিজ্ঞানীকে দেওয়া হয় একটি গোল্ড মেডেল এবং ২০ হাজার ডলারের সম্মানি। গোল্ড মেডেলে বিজ্ঞানী লরেন্সের ছবি ছাপ মারা থাকে।